শম্পা সামন্তর কবিতা


কবি পরিচিতি: শম্পা সামন্ত ইউ জি সি অনুমোদিত 'অন্তর্মুখ' নামে একটি গবেষণা পত্রিকার সম্পাদক । নন্দন , কবিকণ্ঠ, একুশ শতক , কবিতা পাক্ষিক , জিরো বাউন্ডারি , এবং মুশায়েরা সহ আরো অনেক পত্রিকায় লিখেছেন।  তাঁর কবিতা যাপন যেন এই সময়ে দ্রুত উঠে আসা এক মুখ ।

আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে রইল কবির তিনটি মননশীল কবিতা। 


১: মোচন

খুব কষ্ট পেলে কেন যে কান্না আসে আর অভিনয়গুলো কখন যেন সত্যের চাদরে মোরা হয়ে গেলে

আমি বীভৎস এক কান্নার সরোবরে সাঁতার কাটি।

এখন একটা জোশ এসে সরিয়ে নিচ্ছে বাকল। সরিসৃপের মতো।  শীতের দেশে পর্ণমোচীর গা বেয়ে আয়ুরেখা ঝরে যাচ্ছে পাতাখসার সময়।আর একটা কুয়াশায় ঢাকা সকাল ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাঁড়ে বয়োবৃদ্ধ কাকের মতো ডানা ঝাপটেছি। ক্লান্ত, অবসন্ন হৃদয় খুঁটে, এক খানা ধানবীজ ফেলে গেলে আমি বর্ষার গান গাই। মল্লার  মেঘগুলি বৃষ্টি আনে। আর বীজটি অঙ্কুরিত হচ্ছে রুহ রুহ স্বপ্নের জাল বুনে,আকাশের দিকে।


২: বয়স ঘনিয়ে এলে


বয়স ঘনিয়ে এলে গ্লুকোমায় ঝাপসা হচ্ছে চোখ।

কিউটক্যাল ক্ষয়ে যাচ্ছে দাঁতের।

মালাইচাকি ও কসেরুকা মৃত্যুর দিকে ধাববান।আমার চৌহদ্দি জুড়ে শীত এসে গেলে মোচন সেরে ফেলছে পত্রবাহ রুহ।

আর আমার জরাথ্রুষ্ট মন তখনো প্রতিবাদী।

আমি ও কোমল গান্ধারে প্রেম পদাবলি গেয়ে  যাই

 প্রেম যে জড়ত্ব পায়নি তখনও।


৩:  আদিম যুগে

শম্পা সামন্ত

একটা বড়সর প্রতিবাদের স্বর রুদ্ধ হলে ব্যর্থতার গায়ে লেগে আছে পরাধীন রক্তের দাগ।

আর পিঠগুলো ভরসা হারিয়ে ঠেকে যাচ্ছে দেয়ালে।

আমি যেন কাঠবিড়ালির মতো

চমকে উঠে গলার নিম্নস্বরে ডাক পারলাম ইওর আমেন।

আর কাপালিকের মতো লালন করছি এক একটা কপাল কুন্ডলা নদী তীরে। এখন সে হাত ধরে পার হয়ে যাচ্ছে ইচ্ছেনদী,তখনই পদতল পুড়ে গেছে। ভেঙে গেছে পারাপারের সেতু।আর কাপালিক ভেসে গেছে স্রোতময় প্রবাহে।এখন যেন উরু ভর্তি রক্তবীজ আর খোঁড়া শেখ তটিনীর পদরেখা ধরে হেঁটে যায় আদিম উপত্যকায়।




Comments

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা