রূপা অপরাজিতার কবিতা
রূপা বন্দ্যোপাধ্যায়, জন্ম21শে মার্চ,1976,হাওড়ায়। উচ্চ শিক্ষিত হলেও একজন গৃহবধূ এবং সমাজকর্মী । নিজস্ব সংবেদনশীলতায় লেখার তাগিদ এবং স্বতঃস্ফূর্ত কবিতা লেখাতে বিশ্বাসী। " আমার সেই ভাবনারই বৈদূর্য্য প্রতিফলন , প্রতিটি অক্ষরজাতক ই আমার জীবন দর্শনের এক একটি নিদাগ দর্পণ" এটাই হল কবির কথা।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে রুপা অপরাজিতার চারটি কবিতা
1)অভিমন্যুরা
পাওনাগুলো নেবার সময়
পালনও পালকে মুড়ে নিই,
অভিজাত অভিঘাত তুলে রাখি
পুরনো সুটকেশে,
ছত্রাকগুলো ছড়িয়ে পড়ছে
ওদের নজর হয়ে আমাদের শরীরে।
আপাত স্থিতিশীল আমাদের সবুজ আকাশ
আগ্রাসী নিঃশ্বাসের চাতুরি নিয়ে আমাজন থেকে
কান্না পাঠাচ্ছে যে যুদ্ধপিড়ীত বালক
তার হাতে একটুকরো চকোলেট তুলে দিতে পারলেই
ঘুম আসবে পৃথিবীর চোখে
অজানা গর্ভের সাবলীল শ্লোকে
আবার........আর ভুল না করলেই কি নয়?
2) কাঁটাতার
আহত চাঁদের নীচে
ছড়ানো ছেটানো সব ঝড়ে ভাঙা
পাখির বাসার মত সাজানো সংসার
আটকে আছে শখে
নিহত দুচোখে
সীমানার ক্যানভাস।
ওইখানে পরিপাটি লক্ষ্মীর আলপনা,
পীরের প্রসাদ
কাঁটাতারে লেগে মেঘ,
নিবিষ্ট অবসাদ।
আমি ঠিক ওখানেতে আছি
মরে যাওয়া স্বপ্নের বড্ড কাছাকাছি
এক হব ফের
সীমারেখা রয়ে যাবে ইতিহাসের শবে
ঠিক যেভাবে চোখে ভাসে
রক্তমাখা দীর্ঘশ্বাসে
তরতাজা মৃণাল, সামসের।
3) ঘরের রঙ সাদা কালো
আড়াই ঘরের দ্বারে কড়া নাড়ে কবন্ধ অশ্বযুথ
দানে দানে পরিত্রাণ ছিঁড়ে খুঁড়ে ওড়ে
বোড়ের সংসার।
ফোলা পেট লিকলিকে রুগ্ন লাল্টু পল্টু
ঝুলে পড়া আড়াল, প্লাস্টিক শাঁখায়
অভাবের বেলাজ ময়লা।
দান দাও রাজা
কাঁচভাঙা আয়নায় রমণী অবয়ব,
ওই নারী এখনো রজঃস্বলা
শুষে নাও শিরদাঁড়া র সিমেন্ট।
রক্ত মাখা কাপড় উড়ে যায় আচমকা ঝড়ে
পড়ে আছে উলঙ্গ পৃথিবীর শব।
4) স্খলিত
খোলা আকাশের মত মুখোমুখি
এসে বসে চতুর ধারাভাষ্যাকার
সম্পাদকের ভুলত্রুটি শোধরাবো
সে ম্যানুস্ক্রিপ্ট নিয়ে গেছে
প্রবাসী বাতাস।
অতএব আমি
খসে পড়ছি কাঁচের মত
অজস্র সুখে শোকে বিগত বিষাদে
আর গমগম করে বাজছে আমার
অভ্যন্তরীণ খরা
এইবার তুমি আর আবাদের আশা রেখোনা
শুধু মন্দিরটি চলে গেছে অপবিত্র পথে
যার শেষে ঢেউ ভাঙা
সাজানো মন্দারমণি।
Comments
Post a Comment