রণজিৎ পান্ডের কবিতা

1 :আস্তিকতার গান
     -   -    -     -     -


মিশ্রণের আগে যে স্বতন্ত্রতা লক্ষ্য করছি
            তা যে সংঘাত থেকে সৃষ্ট এমনটি নয়

তাই কঠিন কাজ করার জন্য আমি অলস ব্যক্তিটিকেই খুঁজছিলাম
যেখানে সহজ  উপায় খোঁজার জন্য
                   গ্রীষ্মকালীন কোন ছুটি থাকবে না

আজ যে গাছটির নীচে বসে স্বস্তি নিচ্ছিলাম
  সেটি যে অনেক আগেই  অঙ্কুরোদগম হয়েছিল
                    তা নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি

অতএব  সমুদ্রের জন্ম সাল খোঁজা  নিষ্প্রয়োজন

যেভাবে গভীরতা নেবার জন্য গড় অঙ্ক কষা হচ্ছে
 সেখানে ডুবে মরার বিপদ ও  রয়েছে চরম

ভিতরটা তাই  সক্রিয় হয়ে উঠছিল বার বার
কেন না  রাজনীতি করার জন্য আমাকে বেছে নেওয়াটাই  বড় দুর্নীতি


 2 :মাথা
     -   -

নীচের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে
                        গতিশীল অন্ধকারে সিন্ডিকেট নাচ
এবং ভেড়াদের মাথা

যেখানে আঙুলের ফাঁকে পেরিয়ে যাচ্ছে যৌবনের স্পীড

ওদের  মধ্যে যে মাথাটি একটু সুবিধা জনক অবস্থায় থাকে
সে অন্যের অসুবিধা  বুঝতেই পারে না

অতএব বলতেই পারি যে
                     পুরনো ইঁদুর গুলিই সাহসী
  এবং মাথার চেয়ে শক্তিশালী কোনো অস্ত্রই নেই

   যতই তুমি বড় হৃদয়ের হও না কেন
ঈর্ষা থেকে নিষ্কৃতি পাবার কোনো উপায় থাকে না

কারণ মনের মধ্যে যে সভ্যতা সংস্কৃতির ভাংচুর হচ্ছে
সেখানেও একটি জ্ঞানপাপী স্বার্থপর মাথা বেঁচে আছে ।


 3 : পঞ্চম পায়া
       -  -   -     -


কুচোমাছকে কেটে রান্না করতে যতটা কসরত্ করতে হয়
      স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতরাতে গিয়ে ঠিক ততটাই অসাড় হচ্ছিলাম
 
দেখলাম  কুমিরগুলো স্বাস্থ্যবান হচ্ছে ধীরে ধীরে
এবং বাচ্চাগুলোও তৃপ্তির নাচ নাচছে

ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে কিছু নেবার চেষ্টা করলেই
 ওরা তেড়ে আসত
কারণ সিংহাসন যেন অনড় থাকে

খাবার আগুন আর মনের আগুনে দলাদলি
সুতরাং
কেঁপে ওঠার আগে বন্দুকের বাট যেভাবে  দেওয়াল খোঁজে
     সেভাবেই  পিছিয়ে যাচ্ছিলাম

এবং তাক করে ছিলাম


 4  : দখলদার
         -   -    -

-যথাস্থানে না রাখলে যেমন সৌন্দর্য ঠিকঠাক ফুটে ওঠে না
তেমনি  সহজতম কোনো কাজ কঠিনও হয়ে পড়ে

             সেই সন্ধ্যায় যখন আমরা দুজনে
একটি বেল্টের মধ্যে ঢুকে ফিসফাস করছিলাম
তখন উরুবন্দী পাশবালিশটিও জায়গা পাচ্ছিল না

অথচ নীল সবুজের সমুদ্র বেয়ে 
যেভাবে ভেড়ার বাচ্চাগুলো ইচ্ছার বিরুদ্ধে লাফাচ্ছিল
                  ঠিক সেভাবে আমি মানানসই ছিলাম না

তবুও
নিজের মতামত ব্যক্ত করেন বলে
 যদি কবিরা সুনাগরিক বলে  গণ্য হতে পারে
                        তবে আমিও সেই মতে নগণ্য নই

কারণ বিজ্ঞাপনহীনভাবে আমাকেও কেউ কেউ পড়ছিল
               -   --   -
 5: গিট
       -  -
ভিতর থেকেই বন্ধ থাকত সদর দরজা
কেননা
          উল্টো দিকটায় অন্ধকার গভীর হলে
                কুকুরগুলো তেড়ে আসত

যখন তলা দিয়ে আলো দেখা যেত
   ইচ্ছে করেই ছিটকিনিটা খুলে দিতাম
এবং লক্ষ্য করতাম-
      মোরগ ডাকার প্রথম শব্দে যে ব্যক্তির ঘুম ভেঙে ছিল
সেই আজ
    কুকুরগুলোকে মোরগেরই হাড় খাওয়াচ্ছে

এটা কার পক্ষে অস্বাস্থ্যকর
              বোঝার আগেই
গোপন ট্রাঙ্কটার দিকে নজর গেল
এবং
যে সামগ্রীগুলো  ক্ষমতা ধরতে শক্তি জুগিয়েছিল একদিন
সেখানে হাত লাগাতে ইচ্ছেই করল না
কারণ
      আমি তখন দুই পৃথিবীর মাঝামাঝি ।
             -    -     -

 6 : ঠান্ডা
       -  - -


অধিকার খুঁজতে গিয়ে যখন  অন্ধকার ফুটো করছিলাম
  ধনুকের মতো তুমি  বেঁকে যাচ্ছিলে ক্রমাগত
এবং ঘাসের ডগাগুলিও তীক্ষ্ম থেকে তীক্ষ্মতর হচ্ছিল

অথচ তৃতীয়জন চিৎকার করে বলছিল-
   এটা আমার অধিকার ; বিশ্বে চলবে আমার শাসন
কারণ আমি জানি তার জন্যই  ঝড় বইছে


মাছেদের নাড়িতে  পচন শুরু হলে
        যেভাবে  মাছিরা মাতাল হয়ে ওঠে
                   সেভাবেই আমিও প্রতিবাদী হচ্ছিলাম

       হাতে  যদি স্বয়ংক্রিয় কোনো  রিমোট  থাকতো
 ওয়েদার ঠান্ডা করতে এক সেকেন্ডও সময় নিতাম না

     এবং     প্রমাণ করে দিতাম যে                       আঘাতের ফল আর  বরফের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই

Comments

  1. প্রত্যেকটি কবিতা দারুণ লাগলো।প্রথম কবিতায় হয় স্বাতন্ত্র‍্য না হয় স্বতন্ত্রতা হবে।

    ReplyDelete
  2. সব কবিতা সত্যি ভালো লাগার মতো।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা