চিরঞ্জীব হালদারের কবিতা





 মূলত ছোট পত্রিকায় লেখালেখি।
সম্পাদিত পত্রিকা কবিকল্প।
বইপড়া আর কবিতার জন্য সারা জীবন উৎসর্গীকৃত
 জন্ম ১৯৬১ সেপ্টেম্বর।
দ ২৪ পরগণা।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।
গ্রামীন আবহে স্কুল জীবন কেটেছে দ ২৪ পরগণায়
বিগত চার দশক নাগরিক
আবহে কর্মসুত্রে সারা ভারতবর্ষে  দেখা।
এপর্যন্ত ১৫ টি কাব্যগ্রন্থ। প্রকাশিত আটটি।
"বাহান্নটা টেক্কা ফিরে ফিরে আসে" গ্রন্থের জন্য বুক ফেয়ার গিল্ড কতৃক পুরস্কার ২০০৭এ।




 1 :  এই জনবসতির ওপারে কোন জ্যোৎস্নাপল্লী আছে কি?

ভিন্সেন্ট হেঁটে যাচ্ছেন।
সারি সারি মূক আলপথ।
তিনি কি শীর্ন জল ধারার  ক্ষনপ্লাবী সাক্ষাতকার
আর কচি মাছের তাবু থেকে কানকোতে লেগে থাকা হৃদবর্নের উপছানো আলেক্ষ্য ।

তার উলঙ্গ পায়ে কি রক্তের নুপুর বাঁধা ছিল।
এখন দুগ্ধবতী ধানক্ষেত।

 ভিন্সেন্ট ও তার প্রেমিকার পোস্টমর্টেম সঙ্গম কাত্তিকের নিশাহাওয়ায়  নিরুদ্দেশ ছিল কিনা
কে বলে দেবে।


2 :  কিভাবে একজনের মৌলিকত্ব হরন করিতে হয় শিখে নিও।
শিখে নিও শবদেহের বাহক গাড়ির ধর্ম ও তার
মৌলিক তথ্য।
চালক জানেনা দ্রুতি আর শোকের ভেতর
কোন লক্ষণরেখা থাকে কিনা।
অগ্রদানি বামুন জানেনা কাল তার গৃহে অলিখিত
অতিথির আগমন ঘটবে কিনা।
এমত ঘনঘটা ইন্টারভ্যাল কালে পিছু নিলে
তুমি কি ক্যাডবেরী দোকানের ঠিকানা হাতড়াও।

তহবিল থেকে চুরি যাওয়া দোক্তাপাতার নিজস্ব মৌলিকতা দাদীর সেমিজের ভিতরের ভাঁজে তাঁবু খাটিয়েছে যেখানে সেলাইয়েরা  হাই তোলে
নিজস্ব ভাষায়।
ইত্যাকার ছবি তুমি ফটোগ্রাফার বন্ধুর কাছে
এনলার্জ করিয়ে  বাঁধিয়ে রেখো শয়ন কক্ষে।

মোক্তারপুরের মেলায় সেই  বেলুন চাই বলে
যে ছেলেটা তার তথাকথিত ঘরানা গুলো ছড়িয়ে দিচ্ছিলো তোমাদের গুপ্ত রসায়ন কক্ষে
ততক্ষনে তুমি লুকিয়ে ফেলছো
হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনের  বলয়ে
কোন শশা ক্ষেতের ছবি।

এই সব প্রলুব্ধকারীর  নিজস্ব রচনা।
তুমিও রচনা করতে পার কিনা  বিস্তারিত জানিও।


3: জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখি ভেসে যাচ্ছি।


কবিতা কবিতা করে চিৎকার করে উঠতে দেখি কেহ কোথাও নেই।
"কবিতা "কখন "গবিতা" হয়ে গেল  বুঝতে পারিনি।আমার সেই প্রকাশিত গবিতা গুলো----

ক. দুপায়ের মূর্খ তুমি হাঁটতে শেখো
খ. বাহান্নটা টেক্কা ফিরে ফিরে আসে
গ. গরলভাষ
ঘ.চলো যাই চিড়িয়াখানা
ঙ.তরাজুপত্রে ভেসে যাও  বর্ণমালা
চ. আমি ঈশ্বর কে ডাউনলোড করেছি
ছ. সহিস ও ঘোড়ার মধ্যবর্তী যে নদী
জ. আয় চাঁদ প্রেমিকার কপালে টি দিয়ে যা

অপ্রকাশিত খবিতা/গবিতা---+

১ অবিনশ্বর সলতের লণ্ঠন
২ দিনকে উপনিষদ বলে ডাকি
৩ শবের উপর হাসি বদল করা শুক্রবার
৪ উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অজ্ঞাতকুলশীল হারমোনিয়াম
৫ ছায়া বদল করা মানুষের ঠিকানা
৬ মাটির আলতা ও অন্যান্য কবিতা

হাহাহাহাহা
কি মস্করা কি মস্করা
নিজের সাথে নিজের।
পরিহাস আর অপমানে আত্মঝুলি থই থই।





4 : বদলে যাচ্ছে প্রেক্ষাপট।

আমরা ক্রমশ অসহিষ্ণু শ্রোতার আড়ালে
ঘোসেটি বেগমের প্রেতাত্মার বাহক হয়ে উঠবো।
প্রথমে ঘোড়া বদলের খেলার নিপুন কারিগর।
আমরা চিনতে পারবো কখন ধানে দুধ আসার প্রাক্কালে ক্ষুধার্থ প্রেমিক হতে হয়।
মীরজাফর  যখন নামাজ উসুল করবেন ঝানু মুদী দোকানী কে বলা হবে জোরে জোরে সুফি গানের
সুর ভাঁজতে যাতে যন্ত্র আসরে আসার আগে
প্রম্পটার টেরি বাগানোর কাজটা ঠিক ঠিক সমাধা
করতে পারে।

প্রেমিকা ওরফে আসল প্রেমিকা ঘটনা মঞ্চায়নের
মধ্যেই লাপাতা হবেন দর্শক বুঝে না উঠলেও
কলার মান্দাসে ভেসে যাওয়া প্রকৃত মুরুব্বি
মনশামঙ্গলের বদলে বেশ্যামঙ্গলের পঞ্চম পর্বে
কোন পোষাক ছাড়াই ঢুকে পড়বেন।

এত কিছু করার পর যখন কবিতা আর দাঁড়ালো না  তখন অাত্মা বদলানোর খেলায় পারদর্শী
উত্তম কে ডাকা হবে দুচারটে মন উদ্বেল করা
ডায়লগ কাপচাতে।

তারপর রাজকুমারীর তখনও অচৈতন্য।
জগতশেঠ কোন আশা দেখাতে পারছেন না।
আমরা ভেবে দেখতে পারি সর্বহারার ম্যানিফেষ্টে কোনও টিক্টিকির কঙ্কাল না তোজোর বিড়াল।
চেয়ারে চেয়ারে অতিমানবিক ছারপোকাদের
সঙ্গম  বাজারে চড়া দরে বিকোচ্ছে।
আর নিজের বিয়ে করা বউকে আড়চোখে দেখে নিচ্ছি অন্যের দেওয়া লিপ্সিটিকে সত্যি অসাধারন।

 শেষ দৃশ্যে কোন ধার করা কালোপোষাক
 ওয়ালা ঘোড়াকে দেশপ্রেমিক ঠাউড়ে
তিন মিনিট নীররতা পালনের ফিকির খুঁজবো।


5 : একটা মিথ্যাবাদী আর গাম্বাটকে দিয়ে
আজ সমস্ত জুতো সেলাই করিয়ে নেবো।
বিনিময়ে উলটে আমার কিছু মিথ্যের নজরানা
জড়ো হলো।
এরপর কি ভাবে বমি করতে হয় শিখলাম।
মুখে অতি দামী প্রাসাধন।
প্যণ্টালুন থেকে কেনা চড়া মেয়েদের পোষাক।
দুমাসের সুন্দরী অন্তস্বত্ত্বা যে ভাবে বমি করে
আমি সমূহ রোদদূর মেখে নিজের আত্মার গায়ে
বমি ঝেড়ে ফেলছি।
কি আশ্চর্য টক টক গন্ধ কখন যে
পাকা ক্যাডবেরির গন্ধ ছড়াচ্ছে যতক্ষন না
আমাকে সবাই সনাক্ত করতে পারে প্রকৃত।
আমার সোনার জুতোর মধ্যে হা - ক্লান্ত মোজা
যখন অস্ত যান আমার দামী চামড়ার বেল্ট
ওরফে বাংলা দড়ি প্যান্ট কারো কারো
কাছে চুড়ান্ত পেশাদার খুনির হাতিয়ার।
মন্টোকে বলি
দোহাই আমাকে আর একটুু ঝাঁড় পোঁছ করে নাও
অন্তত একটা কবিতার জন্য
খুবসুরত বিবির সাথে তুলকালাম হতে পারে।
আজ উলটো রথে তার জন্য হাড়কাটা গলিতে
সান্ধ্য পাঁপড় ভাজা নিয়ে অপেক্ষা করবো।

Comments

  1. ধন্যবাদ কবি ,কবির কিছু শব্দচয়ন আমাকে মুগ্ধ করেছে...

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা