সবর্না চট্যোপাধ্যায়ের কবিতা


খুব দ্রুত উঠে আসা এই সময়ের এক মুখ সবর্না চট্যোপাধ্যায় । তরুণ এই কবির কবিতার মধ্যে শব্দ চয়নের দারুণ নিজস্বতা আছে এবং সেই সঙ্গে কবিতার মধ্যে থাকে অদ্ভুত মায়াবী কুহেলিকা  ,  অথচ শব্দ ব্যবহার তেমনই সাবলীল । প্রায় সমস্ত প্রথম শ্রেণীর পত্রিকায় লিখছেন কবি । 2018 সালে  সিগনেট প্রেস থেকে প্রকাশিত তাঁর কাব্যগ্রন্থের নাম  -চারদেওয়ালি চুপকথারা  ।
আজ রইল কবির একগুচ্ছ কবিতা । পাঠকের ভালো লাগবে আশা করি



1:খোলস

বায়ু খামচে পড়ে আছে সোনার গোসাপ
মাটির নীচে এক প্রত্ন-খোলস,
তোমাকে চির নবীন মনে হয়!
রক্তক্ষত পুষে রাখা আয়নায় জং-দাগ,
তপ্ত বালির ভেতর ডেকেছে  বহুবার,
' এই তো এসেছি  কুসুম'।
যেন এক বীণ বেজে ওঠে।
নেচে ওঠে তন্বী কোমর...
আলগোছে দুলে ওঠে লোল জিভ...
নিভে যায় ঘুম।
হিপনোটিজম চলে-----' কথার'।
অথচ আমার কোন কথা জানা নেই,
'তুমি ছাড়া'!



2:আহ্নিক

অরণ্যে রোদন একি আত্মহত্যা?
সারসেরা ঘিরে ধরে
ফাঁদ পাতে নিশ্চুপে।
ষড়যন্ত্র শেষের আগেই
মৃত্যু হয় আমার…
ছড়ানো ওষুধের মতো তেমন প্রমাণ নেই কোন
বারবার অন্তর্ঘাতে শুকিয়েছে জল,
কাষ্ঠল শরীরে ভরা কুঠারের দাগ!
ধুতুরার কাঁটার দিকে চেয়ে থাকি।
চোখে কালি পড়ে। দপদপ করে শিরা
তাজা রক্তে রোজ আহ্নিক সারি...


3: পঞ্চপ্রদীপ


সিঁড়ির নীচে অযত্নে পড়ে আছো আঁধার
যেন ছায়ায় মোড়া দুটি ধূসর পালক
মৃত ঘুঘুর পায়ের চিহ্ন নেই আর!
আগুনে পুড়ে যাওয়া আসবাবের মতো
ছাই মাখা কঙ্কাল এক,  বহু বহুযুগ!
যতকিছুই বলি না তোমায়, এ যাত্রার
শেষ নেই কোন!
শেষ নেই ধূ ধূ বালি, হু হু মাঠ
যেন এক ধুলোঝড় ওঠে
আঁকি বুকি কাটে পিঠের ওপর…
তার পুড়ে যাওয়া আঙুলে বাঁধি
সাধনার সাতরঙা নোঙর!
নরম মাংসে পুজো সারে দেবী রোঙ্কিনী
রক্তগন্ধ অমাবস্যা সাজায় আমার…
দেখো ওই কালো জল।
রাতের গঙ্গায় যেন ভেসে উঠেছে
পাঁচটি মৃত শুশুক !


Comments

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা