অনুরূপা পালচৌধুরীর কবিতা

   

অনুরূপা পালচৌধুরী থাকেন রানাঘাটে । ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স । অনুরূপা কবিতায় নানান চিহ্ন সংযুক্তির এক নতুন ভাষা তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিছুটা হলেও সক্ষম হয়েছেন। তিনি কবিতা খুব বেশি দিন না লিখলেও  , তাঁর মধ্যে কবিতার প্রক্রিয়া তথা মনের ভিতর তৈরি হওয়া অদৃশ্য ছাঁকনি তাঁকে তাঁর মতো কবিতার ভাষা আনতে সাহায্য করেছে। পরাবাস্তবতা এবং জাদু-বাস্তবতা মিলে মিশে তাঁর কবিতা নিজস্ব ঘরানার ।  জিরো বাউন্ডারি WhatsApp group e  তাঁর কবিতা নিয়মিত পঠিত হয় ।
আজ রইল কবির একগুচ্ছ স্বতন্ত্র কবিতা

                ১.
       আড়াআড়ি বৃত্তের ঘাতকমুখ


   হয়তো দ্বিতল রাতের উষ্ণ পেট

বেহিসাবি জোনাকির চোখ : হিসাবী জানলার ডিপোজিট এপিকিউরাস

সকাল ৫ টা বেজে ৩৯ মিনিট। সব চেষ্টাই সন্ন্যাসী সন্দেহ

সময় কি ঘন্টা বোঝে

কেনো কিছু বলি না

আরো একটু বরফবালিশ ঘনিষ্ঠতা

আপনি। আমি। তুমি। জীর্ণ চতুর্ভুজ।২মিনিট বেওয়ারিশ বিরতি

চুপচাপ নিঃশ্বাস জমে ওঠে কাগজেকলমে

সত্যিটা বুঝি সত্যিঘুমেই ভোর জমায়

                          ২.
             উপোষী আয়নার পুনর্জন্ম
 

হয়তো বেপরোয়া নদী খুলে দিতে পারে বাষ্পীয় ভোজবায়ু

এখন সময় ১০টা ১৫। আলোকিত আয়নার কালো তিলে পাঁচিলসংস্কার

শুরু থেকে শেষ : ক্রমাগত লক্ষ্যভেদী আমিটায়

প্রশস্ত পানপাতার জ্যামিতিক কান্ডের দ্রাঘিমাংশ

ভারপ্রাপ্ত দুপুরের নৃশংসতা খুন করি ধুনুচিপথের মানচিত্রে

নীরব রোদের পায়চারি

আগুনের দলায় মাংসাশী বসন্তসখ

(আ)গন্তুক প্রহরে জিয়ানো জিভের স্ট্রোকিং থেকে

দীর্ঘকালীন প্রজাপতির‍্যাকে হলদে উর্বর পুরুষডানা

নি(থর) চোরাকাগজ মোছে উল্লাসিত মরুভূমির ফ্লেক্সিংলার্ভা

                          ৩.
      নিমজ্জিত কলিংস্তূপ


কিছু নিংড়ানো জলীয় মেঘদানা

দুপুর ২ টো বেজে ৪৫ মিনিট। তৈলাক্ত ঘুমবন্দর

এগিয়ে আসছে ঘরজোড়া ক্ষিদে : হোলিস্টিক আগুনের কাবাবঘর

পুড়ছে। পোড়া ঘড়ির চোয়ালে বিন্দুবিরহ

আরো একটুআধটু উপবাসী সকালের কালো পেট

আসতে পারো লাল চোখের বিনিময়ে

এখন আপনি জলযোগে ভিজছি। ভিজছে শব্দগত অপরাধ

সমতল চাদরের যেটুকু আলংকারিক জানলার হাঁমুখো বাষ্পঘোর

ততটাই বিলুপ্ত মাঘের কৌরবঘর। ঠিকানার শাসনকাল

আদিম ফুলের অগাধ চাঁদকুড়ো


                             ৪.
              আভ্যন্তরীণ প্লাজমার মাস্তুল

     
এখন সন্ধ্যা ৬ টা ১৫। নিয়মমাফিক সূর্যচুরি

অপেক্ষার মিনিটে টিকটিক মাছি

চায়ের সাথে সিগারেটের গন্ধটা বড় উন্মাদনা দেয়

যেটুকু উন্মাদনা বাঁচাই আগামী ভোরের উচ্ছিষ্ট পাতে

কেনো ভাবি না আক্ষরিক মোমকলঙ্কের পালঙ্ক

বনবাসী সলতের পোড়া জিভে লেগে থাকে ধার্মিক জড়িবুটি যুধিষ্ঠির ছোবল। নিয়ামক জোছনাকুমার

নিখুঁত মৌচাকের গোপন শিশুগাছ। আত্মঘাতী চৌকাঠ

বলতে পারি লুপ্তপৃথিবী আমার প্রসবকালীন গর্ভযুদ্ধ

সীমাহীন ঘুমলাশের আসন্ন রাস্তার হৃৎপিন্ড


                                ৫.
          ব্যক্তিগত দিনান্তের কুঁড়েঘর


হয়তো আমার চাঁদে তোমার অস্থাবর মেঘালয়

গলে পড়ছে গরম কুয়াশার ব্যাসার্ধ

রাত ২টোর এপিঠওপিঠ : এপিডেমিক জোয়ার

চাটতে চাটতে নৌকাতল

তবে এবার বলবো। যাবতীয় আলোর ক্যাসেলে অবশিষ্ট রাতের করাত___

আবার ফিরছো কালকের খরায়

একটু বৃষ্টি কতটুকু আগুনের পরিপূরক

অভিযোজিত ঈশ্বরে প্রতিসৃত নীল দাগের পাঁজরাতুলো

২পায়ে বরাদ্দ রাত্রিকালীন নদীতলব

অযাচিত মুখের চাহিদা বাড়তে বাড়তে____

থমকে যায় সীমান্তবর্তী সততার সূর্যশীত


                              ৬.
        শ্লেষ্মাবাহী ধনাত্বক চেতনা
       

মুঠো আলগা করো

(অ)সম ঘুড়ির প্রতিফলিত আক্ষেপ

আমায় ঈশ্বরী ভাবলে! বিস্ময়ের বনে দাবানল

আমার সর্বনাশী চোখে নিখুঁত মরীচিকা

নীল আলোর জখমি অন্ধকার

অনর্গল কুয়াশার জলজ ক্ষয়কাশ

তত্ত্বটেবিলের চারপেয়ে শিকারি তিমি

কতটা বৃত্ত আদতেই '০' হয় ঘোলা শরীরে

ভোর ৪টে বেজে ৩৯ মিনিট। অবকাশের পায়ে প্রহর ভেজা ঢালুপথ

বাকী ১ঘন্টায় উপড়ে ফেলা আদরলাভায় নৌকাচুরি



Comments

  1. অনন্য গঠন শৈলী, খুব সুন্দর।

    ReplyDelete
  2. খুব ভালো লাগলো।কি সুন্দর পরীক্ষা নিরীক্ষা ।আফসোস আর নেই তোমাদের মতন তরুন প্রজন্মের হাত ধরে বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ হবেই। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইলো।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

শম্পা সামন্তর কবিতা

মোনালিসা রেহমানের কবিতা

বিবেকানন্দ দাসের কবিতা