সেখ মেহেবুব রহমানের কবিতা

পরপর দুইবারের জন্য হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ।  থাকেন তারকেশ্বরের অদূরে একটি গ্রামে । প্রশাসনিক কাজে সময় দিয়েও তিনি কবিতা লেখেন , গান গাইতে ভালোবাসেন এবং সামাজিক ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ান । খুব সাদামাটা জীবনে অভ্যস্ত এই কবির লেখার মধ্যেও সহজ সরলতার প্রভাব । তিনি জীবনের অভিজ্ঞতা এবং দেখা থেকে তুলে আনেন শব্দ  । ছোট ছোট এবং স্বল্প বাক্যের বিন্যাসে তাঁর কবিতার মধ্যে  খুঁজে পাওয়া যায়  অনুভূতি  ও  বোধের এক অপূর্ব মিশ্রণ ।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির তিনটি কবিতা যা সমসাময়িক ঘটনা প্রবাহকে ছুঁয়ে আছে , সেই সঙ্গে রয়েছে কবির রোমান্টিক মনের বিস্তার । পাঠকের ভালো লাগবে আশা করি ।

১ : স্বীকারোক্তি

নাঃ
বেশ ভালো লাগলো
অনেকদিন পরে তোমাকে দেখলাম
মনে হল
তুমি একঘেয়েমি থেকে
বেরিয়ে এসেছো
আসলে সত্যি বলতে কি
তোমার একই কথা বারবার শোনা
আমার কান
আর নিতে পারছিল না
আমিও তোমার ওই
একই কথা শুনতে শুনতে
বড়ই একঘেয়েমির শিকার হচ্ছিলাম
তবে মজা খুউব হচ্ছিল
দেখছিলাম হ্যাংলার মতো
তোমার বারবার উচ্চারিত
একই কথা শুনতে বহু মানুষের ভিড়
তুমি তো জানো
আমি একটু নির্জনতা পছন্দ করি
ভিড় আমার একদমই ভালো লাগে না
কিছুদিন ধরে দেখছি
তুমি আমাকে
একটু বেশি নজরে রেখেছো
বলতে চাইছি
এই যে তুমি প্রতিনিয়ত
একটি চর্চার মধ্যে আছো
সেখানে আমি অনুপস্থিত
আসলে তোমার মনে হয়েছিল
আরো অনেকের মত
আমিও চর্চার মধ্যে থাকি
তোমাকে নিয়ে
কিন্তু ভালো না লাগলে কী করি বল
তবে হ্যাঁ স্বীকার করছি
আমার নীর্জনতার সমুদ্রে
তোমাকে পেলে
সমুদ্রের উতাল পাতাল ঢেউয়ে
পৃথিবী টালমাটাল হতে পারে।


২ : মন্দকাল

মাথার মধ্যে
 লিখি লিখি ব্যাপারটা
বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে
এত চাগাড় দিচ্ছে
যে, একদম
 অস্থির হয়ে যাচ্ছি
 বুঝতে পারছিনা
 কি লিখি
 কিন্তু
বেশ কয়েকদিন
আরও অস্থির,
এই ভেবে
যে, বাতাসে
একটা অদ্ভুত
 গন্ধ
ভেসে বেড়াচ্ছে
 এটা কি সুঘ্রাণ?
 নাকি
 কু?
কু মানে!
 কু মানে কি?
 খারাপ?
আরো খারাপ?
বেশ অস্থির
হয়ে যাচ্ছি,
নাগরিক সমাজ
 বিভ্রান্ত
 হতবুদ্ধি
অস্থির
একবিংশ শতাব্দী
 বিজ্ঞান প্রযুক্তি
এমনকি
 পৃথিবীর বাইরে যাওয়ার
 দুঃসাহসিকতা প্রায় প্রতিনিয়ত,
 তারপরেও বিষাক্ত বাতাস
 বৃহত্তর পৃথিবী ক্রমশ সংকুচিত
 ভালোবাসার পৃথিবীতে
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ
#মানুষ #
বসবাসের জায়গা পাচ্ছে না,
ক্রোধ
জিঘাংসা
কিছু মানুষের বশংবদ,
 শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা চাই
  আকাশে ওঠার সিঁড়ি,
 আকাশে ওঠার সিঁড়ি হয়তো
 কেউ খুঁজে পেয়েছে,
সিঁড়ির প্রতিটা  খাঁজে খাঁজে
গলা পচা
শিক্ষা -দীক্ষা
 ধ্যানধারণা
 নীতি-নৈতিকতা
 আকাশে ওঠার  লালসায়
      রক্তাক্ত।।।।।।


৩: যাকগে.....


জীবন, তুমি কি তুচ্ছ?
 প্রাণ, তোমার কি কোন মূল্য নেই?
জীবন, তুমি কখনো মহার্ঘ।
জীবন, তুমি কি বহুরূপী,
 ভিন্ন ভিন্নরূপে
তোমাকে পৃথিবীর চারপাশে
 দেখা যায় ইতস্তত?
তুমি আপন রূপে খেয়ালি,
জীবন, তোমার ঈশ্বর কি বর্ণবিদ্বেষী?
জীবন, তুমি বারবার
বড় সুন্দর হতে চেয়েছিলে তাই না?
 আর বারবার তোমাকে ছোট হতে হয়েছে,
 তোমার আধার, তোমার ধারক,
 তোমাকে হারিয়ে দিয়েছে।
 তুমি প্রিয়তম হতে পারলে না বুঝি?
 ঠিক আছে,
 হার মেনো না।
ওই যেন কে একজন বলেছিল,
জনৈক "ব্রাহ্মণ মৌলবী",
"দেখা হবে তোমার আমার অন্য দিনের ভোরে
 হাল ছেড়ো না বন্ধু
 কিন্তু কন্ঠ ছাড়ো জোরে"।

Comments

  1. যথাযথ বিস্তার কিন্তু রাজনীতির লোক হয়েও অপরাজনীতির ছায়া কেন কবি বুঝতে পারলাম না।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা