শুভব্রত মন্ডলের কবিতা
শুভব্রত মন্ডল
গড়পঞ্চকোটের থাকেন। একাকী নির্জনতার বাসিন্দা। পেশায় অনগ্রসর কল্যাণ ও আদিবাসী কল্যাণ দপ্তরে কর্মরত।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির একগুচ্ছ কবিতা
1: অনুভব
( ১)
অসহ্য সবুজের শেষে বুঝি নীল থাকে?
এত সংশয়,জল উপচানো নির্জনতা, মিউকাস পাপ,
ঐ দুরের কালভার্টের তলায় জমাট অন্ধকারের মতো,রক্তমাখা ছেঁড়া কাপড় সাবধানে কাঁদে।
(২)
কে না চায় অজস্র ফ্ল্যাশলাইট?
কে না চায় চোখের উজ্জ্বল মুগ্ধতা?
বিখ্যাত হবার পাপমুক্ত জীবন মোক্ষ।
(৩)
খুনীর কামের চেয়ে সরল কিছু নেই;
খুনীর প্রতিটি আঘাতে আছে সুনিবিড় যত্ন।
সরলতা লুকোনো যায়না।
(৪)
জলের অবিনস্ত্য পোকাদের মৈথুনে ঘাটের পাথরের চোখে লোভ; পদ্মিনী নারীর কলসিতে রোজ ক্ষয়; সে গর্তেও জল থাকে।
2: যে ছবিতে ঈশ্বরের নববর্ষের শুভেচ্ছা
আমি সেই ছবিটি চেয়েছি মিউজিয়ামে, আর্ট গ্যালারিতে যে ছবিতে ঈশ্বর নববর্ষের শুভেচ্ছা পাঠিয়েছিলেন।
ছবির নীচে খোদিত তার নাম রামধনুর রঙে
ছবির নীলরঙের ছায়ায় একটি মানবী, দুটি গোলাপ আর একটি মৌমাছি।
আমি ছবিটি কোথাও পাইনি; কম্পিউটার জাল জুড়ে আমার অথই খোঁজ।
ঈশ্বর চুপি চুপি আমাকে বলেছেন স্বপ্নে
মানুষ শুধু মৌমাছি আর গোলাপের পরাগমিলন।
এই শুভেচ্ছার অর্থ ছানতে আমি নামীদামী বিদগ্ধ মানুষের কাছে ছুটে গিয়েছি।
কেউ বলেছেন ফোটন রহস্য কেউবা পিকাসোর কান চুলকানি বুঝিয়েছেন। কেউ বা রেঁনেসাসযুগে দান্তের প্রতিফলন।
আজ মাঝিবুড়ো আমায় বললো, সুন্দর মানুষ হয় প্রেমের শরীরে। শালবনের আদিম ছায়াতে নরম নাভি,উষ্ণ বগলতলির ঘামের আদরে পুরুষের ছটপটানির মহুয়ামিলনে জন্ম নেবে এক একটি গোলাপ।
এক একটি টাঁঢ় এক একটি শিশু।
আজ থেকে আমার চোখ খুলে গেছে।
আমি বুঝলাম শালবন মানেই ঈশ্বর, আর ঝর্ণা মানেই ঈশ্বরী।
শালমঞ্জরীর বুনো গন্ধে ঈশ্বর আরাধনারত।
3 : ভারতবর্ষ হাঁটছে
ঘর কদ্দুর?
মাইলস্টোন পিছিয়ে চলে, আরো কমে আসে সেলফোনের দাগ;
যে জন্মদাগ বুকে নিয়ে জন্মেছো ভারতবর্ষ ভোটের বারান্দায় এক একটা অজুহাত দাও।
হাঁটতে তোমাদের হবেই:
তোমরা ঐ দাঁড়িওয়ালা কিউবার ডাক্তারকে ঈশ্বর মানোনা;
বেমতলব তোমাদের রঙতামাশা ঈশ্বরের মজা লোটা মানুষেরা সুখী গৃহবন্দী।
দোকানগুলো খোলা; সোফায় বসা সুখী ছবিতে হাসির,ভালোবাসার চিহ্ন।
তোমরা হাঁটবে;
হাঁটতে হাঁটতে ধুঁকবে,
ধুঁকতে ধুঁকতে মরবে।
একটি ভাইরাস গনতন্ত্রের কঙ্কাল টি কে ন্যাংটা করে দিল।
ধন্যবাদ ভাইরাস;
4: যে নৌকোটির ছেঁড়া পালে শতবর্ষের আলো*
টিকটকের জিন্সের মেয়েটি ফেসবুকে বালুচরী শাড়িতে সিঁদুরখেলা।
হোয়াটসঅ্যাপের জীবনশৈলীর গ্রুপ অ্যাডমিন ছেলেটি রাতের খোঁজে নির্লজ্জ নীল উত্তাপ।
নৌকো কখনো জানেনা কত গভীর নটরাজেরে নৃত্যে সে পাড়ি দেবে অতলান্তিক।
সে ডিমটিকেও বলুন, তার বাচ্চা চৌবাচ্চার অঙ্কটি যাতে কষে ফেলে।
নমিনিট অমাবস্যায় কৃত্তিকা নক্ষত্র আমি সিওর শপিং করতে যাবেনা।
মোমবাতির আলোয় বলতেই পারেন, হে ঈশ্বর আলোর বক্রপথে যাওয়ার দরকার কি?
ভাঁড়ার শূন্য জাদুকররা ছেড়ে যাওয়া পালে সেলাই করে সাদারঙ করতেই পারেন, হাওয়ার কিছু এসে যাবেনা।
হাওয়া জানে জনগনের ধাতে আজকাল সর্দিগর্মি বেশী হয়।
মোমবাতিরাও লজ্জা পাচ্ছে গলতে।
অসাধারণ
ReplyDelete