মুকলেসুর রহমানের কবিতা


 মুকলেসুর রহমান, পিতা, রফিকুল ইসলাম, মাতা, রাশিদা বিবি, জন্ম 18/06/1998 মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল থানার ছোট্ট গ্রাম টিকটিকি পাড়ায়।পেশায় ছাত্র( B, A দ্বিতীয় বর্ষ) ( কৃষক) শখ কবিতা লেখা বই পড়া( সাহিত্যচর্চা ) মূলত এটুকুই 🙏

আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে মুকলেসুর রহমানের তিনটি কবিতা ।


১: দেশ টা আজ  মৃত


হতভাগ্যা মানুষ দেশ টাকে উলঙ্গ করে ছাড়লো
সমাজের গায় দু-টুকরো ছেড়া কাফন
আমি অন্তর্বাস কাঁধে নিয়ে হাঁটছি
রক্তে ভিজে যাচ্ছে গণতন্ত্র
 বিবেকের প্রশ্ন ভিড় করেছে  টুইন টাওয়ারের  মস্তিকে

ধর্মের গায়ে ঘাঁ, পা ফেলে দেখি দেশটা যেন  মৃত
গণতন্ত্র মরেছে,  তারই রক্তে ডুবে
অর্ধেক আসমানে শুধুই বাঁশ পোতা কবর
  গোল্লা এখন নিদারুণ এক নিরক্ষর রেখায়
  লটকে আছে আমার দেশের কাঁটা মুন্ডু খানা
   চতুর্মাত্রিক পরকীয়ার সুগন্ধ ভাসে ,যেন তোমাদের উৎসব।

তুমি ,আমি হত্যা করেছি গণতন্ত্র
   দখল  করি রক্তে রঞ্জিত দেশের শেষ সীমান্তের এক অংশ
   আমার মৃত দেশে তাজা রক্তের দাগ
   যেন  সজ্জিত সুরমার আঁচ
   রোগাক্রান্ত দেশে!
   সূর্য্য উঠে ডুবে যায় দিনের প্রথম প্রহরে।



 ২ : ফোন কল আসেনি


এখনো হয়তো মধ্য প্রহরের সময় আসেনি
সন্ধ্যা হতেও হয়তো ক'এক প্রহর বাকি
সূর্য্য সাত মুখ খুলে হাসে
মগজ গোলে পড়ে অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে
সময়ের পরিহাসে ,তুমি নিস্তব্ধ নির্বাক
তাই হয় তো ফোন কল আসেনি।

 বসন্তের আবির মেখে, লালে নীলে সজ্জিত রঙের আসরে
 তুমি বসন্তের রঙে  , চমৎকার দেহ রেখা
আমি একাই বসে  অক্ষর চোষী
নির্দিষ্ট সময় মাথা ঝুঁকে হেঁটে চলে কোন এক অসময়ের অপেক্ষায়!
যে বালক বসন্তের বাঁশি বাজায় শিমূল বনে বসে
সে সুরে তুমি বিভোর , তুমি উম্মাদ ,মনোহারা
তুমি বিহরিনি, একান্তই ঘর বন্দি ,
তোমার ব্যাকুলতায় ঘুমহীন রাত কাটে
তুমি নিদারুণ ব্যস্ততায় রাত পোহায় শয্যার পালঙ্কে
আমার বসন্তের রাত নির্বাক অবহেলিত!

  তুমি এখন অঙ্গে বসন্তের  রঙ মেখে  ললিত
  এখন আর তোমার আকুন্দ ফুল প্রয়োজন হয় না
  তাই হয়তো ফোন কল আসেনি।



৩: রোগাক্রান্ত পৃথিবী


      পৃথিবীর অতি প্রাচীন বাড়ি
  জন্মের আগেই এখানে মৃত্যু পায়চারি করে
  আকাশের গায়ে বিষাক্ত বাতাস ভাসছে।
রোগাক্রান্ত পৃথিবী!

সভ্যতার গায়ে পোড়া সূর্যের বেগুনি রোশি
তারই অহংকারে পুড়ছে শত শত বাড়ি।
পৃথিবীর রক্তের নদীটা আমার বাড়ির সামনে,
সিন্ধু সভ্যতার পাল ছেড়া নৌকা ডুবছে
আমি অবিরাম বসে দেখি।

মৃত্যুর উপত্যাকায় সন্ধ্যা নামছে
অসুখের মহাকাল!
চুলোর আগুনে পা দিয়ে রান্না করি
সমাজের বুকে ফুটন্ত ভাতের হাঁড়ি
আমি ফ্যান টুকু খেয়ে, দরজায় খিলে ঘর বন্দি।

জানালায় উঁকি মেরে দেখি রোগাক্রান্ত পৃথিবীর
শেষ কয়েক মাসের হেড লাইন।
সামান্য লাশের শহরে দিন মজুর খাঁটি মাত্র
কয়েকটি লাশ কাফন ছাড়ায় কবরে যেন পূর্ণ অধিকারে শুয়ে।
নাগরিক উপত্যাকায় হিংসুটে অসুখ
যেন একশ দেশের যমজ সন্তান!
দেশের দুর্বলতা পৃথিবীর খাদ্য নালি বয়ে চলে

বেহুলার ভেলা চিরন্তর অপেক্ষায়.......
বহু দূরে রোগাক্রান্ত পৃথিবী একান্তই কাঁদে।





Comments

  1. ভালো লেখা l মর্মে গেঁথে গেল l কবিতায় ভাঙা পৃথিবীর মরা মানুষ ,ঝলসানো প্রকৃতির ছবি পাঠককে ভাবাবে l

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা