দেবাশিস তেওয়ারীর কবিতা


সংক্ষিপ্ত জীবনী
-----------------------
জন্ম১৪ ই জানুয়ারি ১৯৮২. ২০০২ সালে দেশ পত্রিকার শারদ সংখ্যায় কবিতা প্রকাশের মধ্যে দিয়ে বৃহত্তর পাঠক সমাজে পরিচিতি।আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে নিয়মিত কবিতা পাঠে অংশ নেন।এ যাবৎ কবির প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৬।  শেষেরটি প্রকাশ করেছে আনন্দ পাবলিশার্স। দেশ,আনন্দবাজার,বর্তমান,শিলাদিত্য,নন্দন,প্রসাদ,কবিতা পাক্ষিক থেকে শুরু করে অজস্র কাগজে নিয়মিত লেখালেখি করেন।কবি পছন্দ করেন প্রচুর পড়াশোনা করতে,ও প্রচুর হাঁটতে।পেশাঃ গভঃ হাইস্কুলের শিক্ষক(বাংলা ভাষা ও সাহিত্য)

আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির একগুচ্ছ কবিতা। 

১: দৃশ্যের ভিতরে


অতিসঞ্চরণশীল এক একটি দৃশ্যের ভিতর থেকে
তুলে আনি কাশফুল,প্রজাপতি প্রেম,ধানফুল গ্রাম...
আমি আমার পুজ্যপাদ দিদিকে সেসব ছবি দেখাই,
জড়ভরতের মতো ছবির গা থেকে বেরোয় আঁশটে গন্ধ,
দিদি মাছ কাটতে ভালোবাসেন, তাই ছবিগুলোর প্রেমে পড়লেন।প্রেমে পড়তে পড়তে প্রেমে পড়তে পড়তে ছবিগুলো ফিকে হয়ে উঠল, সূর্য রঙ ঢেলে দিল গায়ে...


দৃশ্যের ভিতর থেকে ছুটে আসা স্থবির আক্ষেপ
মাঠ-ঘাট পার হয়ে ট্রেন ধরতে চলে গেল
                                        দৃশ্যের ভিতরে।



২: বাসস্থান


চোখে এসে লাগে কলেজজীবনের হাওয়া
বুকে ফুটপাথের ধাক্কা
মুখে চোরাকুঠুরির টান...

এভাবেই বেঁচে ফিরি আসমান সমান...
নিজেকে উজাড় করি
পরিযায়ী পঙ্খীরাজের কোল ঘেঁষে
শুয়ে থাকা রাজকন্যার সোনার কাঠিটি
আলগোছে তুলে ফেলি

রাক্ষস-খোক্ষসহীন এ জন্ম ভিটেয়।



৩: গার্হস্থ্যজীবনের গল্প


অন্ধকারের কান্না শুনতে পাই বহুদূর থেকে
চতুর্দিকে একটা আলো-আঁধারির গুঞ্জরন
মায়া ভেজা জলে হাত চোবাই
ধুয়ে নিই শীর্ষ থেকে আঁশবটিগুলো
জনকোলাহল থেকে ছিটকে আসা একটা গোঙানি
                  কুড়িয়ে নিলাম আমার বুকপকেটে


তাকে রেখে আসি আমার শয্যার পাশে।


এভাবেই জন্ম-জন্মান্তরের কাহিনি সেঁধিয়ে যায়
আমার ভাঙা দেউলগুলির ফাঁকফোকরে


৪: রিপুগুলো


কনকরোদ্র থেকে ছিটকে আসে মায়া
ঝরে পড়ে বিকেলের ঘাসে
মেঘের চামড়া সেলাই করতে করতে
আমি বুক  বাঁধি
নিষ্ফল প্রত্যাশাটুকু গায়েও মাখিনা
দক্ষিণ সমুদ্র ডাকে,অবশিষ্ট নুনের আক্রোশ...
রেখে আসি মায়ার কার্নিশে


এভাবেই রিপুগুলো ঘুরেফিরে আসে
             এ জন্মের বিছানার পাশে 

Comments

  1. দেবাশিস বাবুর কবিতা সময়ের দলিল l জীবনের ভালো মন্দ ,প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি,ঘাত প্রতিঘাতের বাঁক চিহ্ন চিত্রিত l

    ReplyDelete
  2. জীবনের কবিতা । পাওয়া -না পাওয়া, দুঃখ, হতাশা, স্বপ্ন সবকিছুই নানা রৃপকল্পে , সংকেতে আভাসিত । একটা নিবিড় উচ্চারণ পাঠককে বেশ আকর্ষণ করে । তবে চোবাই কথাটা ঠিক শ্রুতিমধুর লাগলো না ।
    কবির উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি ।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা