এ এস এম আবদুল্লাহ র কবিতা


নাম এ এস এম আব্দুল্লাহ। পত্র পত্রিকায় এই নামেই লেখা প্রকাশিত হয়। প্রকৃত নাম মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ মন্ডল।  পেশায় শিক্ষক।  এখনো কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি । তবে আগামী দিনে নিশ্চয় হবে । নতুন প্রতিভা খুঁজে তুলে ধরাই তো জিরো বাউন্ডারির কাজ ।

আজ একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির একগুচ্ছ কবিতা  , যা পাঠকের দৃষ্টি টানবেই।



১: ক্ষয়

দেহের প্রধান কার্যালয় বিভ্রান্ত বলে শঙ্কিত হই
কারণ, তখনই দুই ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে
নেমে আসে অপরিমিত আবর্জনা।
বাকি জীবন অন্ধকারে হাঁটানোর জন্য
অস্থিহীন অঙ্গ সঞ্চালিত হয় প্রযুক্তির ফলকে।

নাম-ঠিকানা পাশ করে হাজারো বিদগ্ধ জন
যুগের তালে ছোটৈ নৈশ উল্কার মতো
অযথা উপমায় পেট ভরে কালের জনতার
অচেনা স্থলে দৃশ্যমান হয় লজ্জার জলজ স্বর।

আগুন আর স্বপ্ন নিয়ে ভাসমান দাসত্ব
বন্ধক রাখে শৃঙ্গ অর্থে কিংবা অনর্থের মোহে
তারপর ক্লান্তিতে হিসেবের খাতা খোলে
তখন হারিয়ে যায় প্রথম যৌবন, সকালের রোদ্দুর।


২: শিরোনাম

অভিধান খুলে শব্দ খু্ঁজি অবিরাম
সব ঋতুর নির্যাস নিয়ে গদ্যময়
কাব্যের অবগুণ্ঠন যদি খোলা হয়,
কী হবে আমার কবিতার শিরোনাম?
অমাবস্যা পাথরের পাঁজর ভাঙেনি
লোকালয়ে ভাঙে পাখিদের কচিডানা
দেখেনি আরামি লোক; করেনিকো মানা
পথ গেছে ঘুরে তবু বরফ জমেনি।

তাই তো খুঁজি শূন্যলোকে, খন্ড শিলায়
পথের বাঁকে, তৃষ্ণার্ত সাহারার বুকে
কেবল একটা শিরোনাম নেব দেখে
মানুষ যেন মানুষের বুক মেলায় ।
দৃশ্যবিহ্বল ভাবি মন-মগজ চষে
শিরোনাম খুঁজি জগতের শব্দকোষে।


৩: স্ত্রীলোক


আর কতকাল অপেক্ষা করে থাকবো
আকাশ তো আর নামলো না
পর্ণমোচী বৃক্ষের মতো ঝরে যায়
আশা-নিরাশার অলৌকিক উৎকণ্ঠা
বহু নারীর আলো ছিটকে আসে
ভালবাসার নানা উপসর্গ নিয়ে
তবুও মেঘ কাটেনি পাশের আকাশের।

আজকাল মদিরার নেশায় শান্তি খোঁজে
উলঙ্গ অতীত ঘোমটা টানে;নববধূ যেন
অন্ধকার স্ত্রীলোক প্রদীপ জ্বালে
সন্ধ্যার গায়ে লেপে দেয় দিনের শেষটুকু
তারপর মেলে যায় একাকিত্বের সামিয়ানা।

ঘরের আঁচলে মন মুছে দেয় নিকট গ্রন্থি
নিশীথের অখন্ড অন্ধকারে ঢাকা শরীর
নিদ্রায় চড়ে পৌঁছয় ফজরের ঘাটে
ওজুর স্রোতের পাড়ে সেই অন্ধকার নারী।

৪: শ্রেষ্ঠ যাপন


আটপৌরে পরিবারের স্বপ্নের ঘর অন্য
সেখানে যুদ্ধ থাকলেও হাতিয়ার থাকে না
স্বপ্নের চূড়ায় ওঠা সামাজিক ভাবে মানা
জীবন যাপিত হয় শুধু জীবনের জন্য।

প্রজন্মের জন্ম নিয়ে কত রীতি, কল্পবিভা
প্রস্তুতির পরিসর তখন স্বপ্নের দৌড়ে
দম্পতির মিলন বাঁচে যেন নৌকার দাঁড়ে
কূলে নিতে খরচ হয় যাবতীয় প্রতিভা ।

এভাবেই চলে আসে আমাদের হাকিকত
কর্পূরের মতন উবে যায় শ্রেষ্ঠ যাপন
অসম মানসে নামে শুধুই অভিসম্পাত
একমাত্র নিজেকেই ভাবি একান্ত আপন।

নিশুতি নীরবতায় ভাবনার সাগর সেঁচে
শ্রেষ্ঠ যাপন আমার এখানেই দেখি বেঁচে।

Comments

  1. চারটি কবিতাই ভালো লাগল।শুভেচ্ছা নেবেন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ সুজন। প্রাণিত হলাম। শুভেচ্ছা সতত ।

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা