আলিউজ্জামানের কবিতা


পরিচিতি:
জন্ম :-১৯৯৮ সালের ২৮শে জানুয়ারী।
পিতা - হবিবুর রহমান ,মাতা - আকলিমা বিবি
জন্মস্থান - মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জ ব্লকের দুর্গাপুর গ্রামে।
বর্তমানে, গভর্মেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জনিয়ারিং অ্যান্ড টেক্সটাইল টেকনোলজি শ্রীরামপুরে টেক্সটাইল টেকনোলজি শাখায় প্রথম বর্ষে পাঠরত।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে আলিউজ্জামানের একগুচ্ছ কবিতা

(১)জলকুমীর/আলিউজ্জামান

পা চলছেনা!
আহত ডাইরির পাতার ভিতর।
বিবর্ণ উৎসব মুখরিত দিনে ,
শুধু তোকেই মনে পড়ে
                       আমার জলকুমীর।
যত ইচ্ছে কাদা দে!
বুকপকেট থেকে খুচরো পয়সার শব্দে
নেমে আসবে !
বেহায়া নদী।
ছলাত ছলাত ছলাত ছল
জলের সংঘর্ষে ফেনা হয়ে যায়
স্যারীডননির্ভর আমাদের
                           সেই নদী।


(২)ধর্ম/আলিউজ্জামান

যতটুকু গুছিয়ে রাখলে

                       এলোমেলো মনে হয়।

সেখানে মায়ের ভাঙাচোরা। বাসন ধোওয়ার

শব্দে।প্রিয় জিন্স প্যান্টের রঙ চটার গল্পে

ভিড় বেশি হয় মানুষেরই মেলায়।

এই সমস্ত কিছু জানার পরেও

আলোর নিচে কাঁপতে থাকা

ভাঁজ করা কাগজনৌকা দেখে

আমার কেবল ওই নদীটির কথা মনে পড়ে !

এমন নদী !

যার কোনো অগোছালো ধর্ম নেই।


(৩)রাত্রিযাপনের ভবিষ্যত/আলিউজ্জমান


পুরনো প্রস্তর খণ্ডের ফাঁকফোঁকর খুজে যতটুকু ঋণ পায়। তা মাসোহারি খাতায় রাধাকেন্দ্রিক পণ্যদ্রব্যে ভরে উঠে আমাদের ভাঙ্গা দ্বিতল বাড়ি।তারপর কুয়াশার নৈশব্দে মিশে থাকা গভীর তারারা । গুড় জলে ভেজা দুপুরে ঝরে যায় অন্ধকারে।এসব অন্ধকারে স্কুলফেরত পরিশ্রমী বালিকার স্থির খাতায় রচিত হয়। করপুটে রক্ত সেবনকারী অক্ষর।
                     সম্ভাব্য রাত্রিযাপনের ভবিষ্যত।




(৪)আমার অজ্ঞতা/আলিউজ্জামান
           (১)
তোমার কিছু কিছু না বলা কথা ,
আমিও বুঝি ,
মাঘ শেষে আগুনের স্তূপ নিভিয়ে ,
আমাকেও ফিরে যেতে হবে ,
সে সব বাসন্তী রঙের মেলায়
যেখানে স্বজন হারানোর ভয়ে ,
বাবার আঙুল ধরে ঘুর ঘুর করে ছোট্ট বালক।
                    (২)
তোমাকে বোঝা গেলনা ,
ঘন সুপুরি বনের
ভিতর ,
পাখিদের সাজ সরঞ্জাম ,
কাঁসার কলসী ভরে জল ,
মা ছুটে আসছে কলতলা থেকে,
দুপুরের খাবার আর তোমার ঘাস আঙুলের যাদু,
কিছুই বোঝা গেলনা আজও.....
            (৩)
কাপড় গোছানোর আগেই,
প্রিয় সুটকেসের ওজন দেখে নিতে হয় বারে বারে।
এরপর কিছু অপরিমিত লবনকণা,
পাখিরা খুঁটে খেতে খেতে কখন যে ,
সুটকেস অভিকর্ষের টানে মাটিতে পড়ে,
বুঝিনা আমি।

(৫)সাদা রুমাল/আলিউজ্জামান

বহুকাল স্নানলিপি শিখিনি।ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে।গোপনে পিকপকেটে রেখে দের যায়।ঘ্রাণ ইন্দ্রিয় ।মৃত সঞ্জিবনীর দশম করোটির স্নায়ু।এসবের সঙ্গে কোনোদিন যোগাযোগ ছিলনা জেনেও।দুর বন্দরের সাদা রুমাল মুছে দ্যায় ঘাম ।আত্মহনন কালে স্নান লিপির স্মরণে।

(৬)ফ্রক /আলিউজ্জামান

তোমায় দিলাম গোধূলিবেলার স্নানকাতর ফ্রক,

আলোর ভিতর আলোহীন হয়ে তোমায় বলেছিলাম,উল্টো চোখে দেখো আকাশ।

সন্ধ্যার অলক্ষ্যে তুমি তুলে নিয়েছ ,
প্রতিলবনের ,
পুতুল কথা...

কিন্তু ,তোমায় দিতেছিলাম আরেক জ্বলন্ত ফ্রকের উর্বরতা।


Comments

  1. আলী এগিয়ে চলো

    ReplyDelete
  2. দারু! বিশেষত-

    (৬)ফ্রক /আলিউজ্জামান

    তোমায় দিলাম গোধূলিবেলার স্নানকাতর ফ্রক,

    আলোর ভিতর আলোহীন হয়ে তোমায় বলেছিলাম,উল্টো চোখে দেখো আকাশ।

    সন্ধ্যার অলক্ষ্যে তুমি তুলে নিয়েছ ,
    প্রতিলবনের ,
    পুতুল কথা...

    কিন্তু ,তোমায় দিতেছিলাম আরেক জ্বলন্ত ফ্রকের উর্বরতা।

    ReplyDelete
  3. "আলোর ভিতর আলোহীন হয়ে তোমায় বলেছিলাম,উল্টো চোখে দেখো আকাশ।"- দাগ কেটে দেওয়া লাইন। সবগুলোই সুন্দর।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা