প্রনব রুদ্রর কবিতা


পরিচিতি : মালদার বাসিন্দা কবি প্রনব রুদ্র।  ওর নিজের মুখেই শোনা যাক -  নিজেকে নিয়ে বলার  তেমন কিছু নেই। একদিন মরে যাবো জেনেই অজানা দিন পর্যন্ত বেঁচে আছি। প্রতিদিন জীবনপাত্র পান করে শুষে নিচ্ছি। বাংলায় পড়তে আর লিখতে পারি। যাপনলিপি যত যন্ত্রণা দেয় তত একা হতে হতে আত্মধ্বংসের নেশা জাগে। জ্বলতে জ্বালাতে কিছুই পারি না। অতএব, প্রতিটি দিনের উপহাস, কষ্ট, সুখ, মাথা যন্ত্রণা - বড়ো কৌতুক নিয়ে দারুণ উপভোগ করছি। হয়তো ভালো আছি নয়তো নেই। সমাজের বিভিন্ন দৃশ্যে মাঝে মাঝে কান্না পায়, বিরক্তও লাগে। ২০০৮ সাল থেকে "বিষাণ" একটি নাট্য সংস্থার সাথে নাট্যকর্মী ( বিনা পারিশ্রমিক) হিসাবে যুক্ত আছি। সুযোগ পেলে অভিনয়ও করি। জীবিকার কোন নিশ্চিত সংযোগ এখন পর্যন্ত নেই।

আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির একগুচ্ছ কবিতা।

১: আত্মাঘাত

সূর্যের নীচে ঝলমল করে উজ্জ্বল আলো
 প্রদীপের নীচেই থাকে অন্ধকার কালো।

ভূমিষ্ঠ হবার আগেই হত্যা হয় কত শিশু ভ্রুণ
সমঝোতার নামে মারা যায় ভালোবাসা।
একাধিকবার বাসলে ভালো

সমাজে হতে হয় চরিত্রহীন কালো।

বিবাহিত পরকীয়ার মৃত্যুদন্ডে
অতৃপ্ত চলে যায় কত বসন্ত
সামাজিকতা জেগে ওঠে
জানালাবন্ধ কাফনমোড়া বিশ্বাসে।

গোপনে খিলখিলেয়ে উঠে শরীর
স্বাক্ষর রাখে দীর্ঘ শীতঘুম সর্ম্পক
কানাবক আবাসনে বৃষ্টি খোঁজে
সম্পর্কে রক্তদাগ আত্মঘাতী সুখ বুনে

প্রতিটি স্পর্শ পাপবিদ্ধ আতসমুখে
পরাগরেণু ঝড়াভাস যাপনলিপি মাখে

২: ডুবে গেছে তারা

উড়ে গেল স্বপ্নের দেশ
বাঁশ বাগানের মাথায় নেই
কাব্যিক কোন আকাশ।

ঘোর অমাবস্যায়
বৃষ্টি বা বর্ষায়
গায়ে থিকথিকে ঘা নিয়ে
সময়ের কোল থেকে লাফিয়ে
হারিয়ে গেছে মূল্যবোধ

আর ওই দ্যাখো বর্তমান
রাস্তার মাঝে চিৎপাত শুয়ে
রক্ত বমি করছে বিবেক...

মানুষ কোথায়?

কো
থা




মানুষ!

৩: ধ্রুবক কীইই

রাত আড়াইটেতেও একটানা কোকিল ডাকছে
প্যাঁচার ডাক বুঝি বিষাদময়তা আনে।

গভীরে ডুবলে দেখি খালি-"পাত্র"র শব্দ বেশি
বোধের বিস্তার সীমানা সর্বদা ধ্রুবক থাকে?
কতদূর পর্যন্ত বিঁধতে পারো জানার তীর!
জলের উপরে তেল ভাসে নাকি
তেলের উপরে জল; কোনটার পরিমাণ
কতটা মিশলে চোখ হয় টলোমল
কুউউক কুহুউউ কুউউক কুহুউউ শব্দযান ইথারে
মৃত বসন্তে কোকিলও কি গায় সাথীহারা সুর

৪: অগোত্রীয়
১.

লোভের তেজ
মৃত্যু শিয়রে হাসে
জোনাকী আলো
২.
বসন্ত আসে
পথ কালোর রাতে
বিষ দেহ খাদক
৩.
আলো উড়লো
ঘড়ির টিকটিক
বোধের ছায়া নেই
৪.
এখন খা খা
খাবার চামড়ায়
রেলে কাটা রুটি
৫.
পুড়ে যায় মা
স্টাইরিন নেমেছে
আগুন ফূ্র্তি

৫: ঘুঘু রাজের শেয়াল কাজী

অবশিষ্ট শস্যদানা কাকের দল পেলো
ঘুঘুগুলো তারপর-ই  কাকের বন্ধু হলো।
ঘুঘু-কাকে মিলমিশে সিংহাসনে এলো।

তখন থেকেই শেয়ালগুউউলো
সুযোগের অপেক্ষায় লেজ গুটিয়ে রইল।

ক্ষামতাফিমের নেশায় এখন
ঘুঘু-শেয়াল-কাক এবং
গণতন্ত্র স্বৈরতন্ত্র ধান্দাতন্ত্র সমান হচ্ছে!





       

Comments

Popular posts from this blog

দেবীপ্রসাদ বটব্যাল এর কবিতা

শ্যামল সরকারের কবিতা

শম্পা সামন্তর কবিতা