নিত্যানন্দ কবিরাজ এর কবিতা পাঠ



পরিচিতি -- নিত্যানন্দ কবিরাজ , বিষ্ণুপুর,  বি  . এড.  কলেজ রোড,  উত্তর পাড়া ,  পিতা - ক্ষুদিরাম কবিরাজ , মাতা - চণ্ডীবালা কবিরাজ  , বাবা মায়ের অষ্টম তথা শেষ সন্তান ;   শিক্ষা - বি.   এ , বি. পি.  এড ,  আপাতত পেশা - ফুটপাতে কখনো বা ঘুরে ঘুরে  স্টেশনারি জিনিস , আর্য়ুবেদিক ঔষুধ , ফুল,  চারা গাছ বিক্রি করা ।

আমরা গর্বিত জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে নিত্যানন্দর কবিতা প্রকাশ করতে পেরে । আজ রইল কবির একগুচ্ছ কবিতা ।


১ : ফুটপাথ

ফুটপাথের পেট চিরে
ভাতের হাঁড়ির তল্লাসি নিতেই
ছিয়াত্তরের মন্বন্তর জেগে ওঠে
প্রতিটি শরীরের খাঁজে খাঁজে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
লবণাক্ত হয়ে ঝরে পড়ে নির্ভেজাল
নীলাক্ষিতে সামুদ্রিক তুফান
আছড়ে পড়ে ভারতের আনাচে কানাচে

ভাবনায় ঢুকে পড়ে ব্ল্যাকহোল , হাহাকার কালো
পূর্ণিমার চাঁদ ঝলসানো রুটি , ভ্যানিস কালি

তবুও ভারতচন্দ্রের সন্তান গুলি
দুধে ভাতের অপেক্ষায় ধর্মগ্রন্থ মানে আজও

রাত গভীর , আরও গভীর হয় আঁধারি সময়
ফুটপাথ ঘুমায় দিব্যি যমের কোলে
জেগে ওঠে আত্মা যান্ত্রিক শব্দে ,  আবারও ঘুমায়
হেসে ওঠে লজ্জা কুবেরের বারগেনিং এ

ফুটপাথ কাঁদে শিশিরের শব্দে , রিখটার স্কেলে


২: চতুর্থ প্রজাতি , উভখেচর

ফ্যাদোমিটার দিয়ে জীবনের
গভীরতা মাপছি এবার ,
খুঁজছি সেই মাছলি রাজা-রানিকে
রহস্য জেনে নিয়ে
আমিও সমুদ্রের তলদেশে
আস্ত একটা পৃথিবী বানাতে চাই ।

সেই প্রজাতির পাখিদের দেখে বিস্মিত হই
সেই প্রজাতির জীব-জন্তুদের নত মস্তকে নমস্কার
কিভাবে পারো তোমরা -- নিজস্ব ব্যালেস্নিং ? !

অভিযোজন থেকে অভিযোজিত হওয়া --
দৈবিক মিস্টিরিয়াস ,
তার উপর যদি ভারসাম্য রাখতে বলো
আঁতে ঘা লাগবে না !
আমি যে ভয়ংকর মহামানব
ঈশ্বরের পরেই আমার স্থান
আমারও তো একটা সুখের অহংকার
ধ্বংস করার স্বাধীনতা আছে নাকি !

হায় !  মানুষ তুমি কি পারো না !!?


৩ : হোয়াইট কথা রেড কথা

হোয়াইটের সঙ্গে রেড মেশাতেই
রামী- চণ্ডীদাস জেগে উঠলো ,
তা দেখে পিঙ্ক আত্ম- গরিমায়
আঠারো প্লাস বি.  এফ ,
বুঝতে পারলাম না কেন এমন হোলো
কৃষ্ণ- সুদামাও তো হওয়া যেতো

শুকুন্তলার সঙ্গে দুষ্মন্তকে মেলাতেই
জি-বাংলা আর স্টার জলসার সিরিয়াল গুলো
বিদ্রোহী হয়ে উঠলো কেন
একথা চকবাজারের জটায়ু পাগলকে জিজ্ঞাসা করলে
পশ্চিমবঙ্গের কথা বলে

ভাগ্যিস রাজ্যের সঙ্গে রাজনীতি মেশায়নি
নয়তো জটায়ু পাগল কি বলতো কে জানে


৪ : ওভার স্টেপস

ফুল যেভাবে ফোটে তোমাদের উঠোনে ,  পাড়ায় পাড়ায়
সে ভাবে সূর্য ওঠেনি বোকা ভাঁড়ে ,
লাঞ্চের শালপাতায় আজও তাই
অমাবস্যা হাত-পা ছড়িয়ে মাঝে মাঝে
খঞ্জনি বাজাচ্ছে পেটের ভিতরে

সমোচ্চশীলতার ধর্মে কিছু রেনবো নীতি
সেফটিভাল্ব দিয়ে ক্রমাগত উবেই যাচ্ছে

গারবেজে গারবেজে ছেঁড়াছিঁড়ি মন্ত্রিদের গায়ে
ঠ্যাং তুলে হিসি করে যে প্রভুভক্ত
কিসের সংকেত দেয় কে জানে

জুতোর জীবনী তত্ত্ব কে বুঝবে
ধারক তো আর ধর্মরাজের কথা জানে না

সারোগেসি বেবি একদিন জানবেই
জল থেকেই তার জন্ম
তবুও বুকের দুধ খেতে পায়নি ছ- মাস

যে সারোগেসি চাষিটি আত্মহত্যা করে চলে  গেল
সে ব্যথার ভার বোঝাবে কি দিয়ে

চলো , আজ সত্যি সত্যি ফুটবল ফুটবল খেলি
চাঁদটাকে কিক মেরে শনির দুয়ারে তুলি
মঙ্গলে জমি কিনে শান্ত টিউশন খুলি


৫ : উপলব্ধি

সমুদ্র ধরে আছে যত জল-জলরাশি , ঢেউ
চেনা- অচেনা , তিথি- অতিথির জেরক্স পৃথিবী ,
লাকডুব রসায়ন , ছন্দে রন্ধে পাল তুলে
চোখ ধরে আছে ততো - ও - ও-

জীবনের শুরু
কখনো গোলাপি কখনো ধূসর
কখনো বা হলদেগুড়ি পাখি  --  টিউলটুটুল...  টিউলটুটুল...

তারপর
উপত্যকা যেমন মরে আছে
জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে
ভালবাসা তার মানে

Comments

Popular posts from this blog

শম্পা সামন্তর কবিতা

মোনালিসা রেহমানের কবিতা

বিবেকানন্দ দাসের কবিতা