চন্দনা সাহুর কবিতা
চন্দনা সাহু , গৃহবধূ , থাকেন সিন্দুর মুড়ি , সবং , পশ্চিম মেদিনীপুরে ।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে তাঁর তিনটি কবিতা।
(১) সাঁকো
জীবন মূত্যুর সন্ধিক্ষণ
বিষাদ ও রোমাঞ্চে ভরা এক দোদুল্যমান সাঁকো
মায়া,মমতা,হর্ষ,বিষাদের অবসানও
অসীম জ্ঞান লোকে প্রবেশের স্পৃহা
মনের অশান্ত অনুভূতির,স্থিরতায় প্রবেশ
দুপাশে নেই অভিনবত্বের ছড়াছড়ি
নেই চোখ ধাঁধানো জৌলুস
নেই পুঁথি গন্ধ ভরা অন্ধকারের ভয়
সেথায় বিরাজিত কেবল পরম শান্তি
দৃষ্টি সেথায় স্থির ও শাশ্বত
সেইক্ষনে ঝাঁপ দিই আমি
ডুবে যাই ----------শুধু ডুবে যাই
জানি না কোন অতলে -------------
এক জ্যোতির্ময়তায় আবিষ্ট হই
আত্মার সাথে পরমাত্মার মিল ঘটে তখনই
জীবন মরন একাকার হয় সেইক্ষণে
প্রতিটি পদক্ষেপে করি পরম ব্রহ্মের অনুসন্ধান
(২) আলোর পথে
সঙ্কটে,সঙ্কায়,জেরবার পৃথিবী
রাজপথ থেকে সড়ক,সড়ক থেকে আলপথ,মেঠোপথ
সবকিছু শুনশান
এক শব্দভেদী বানে যেন সবার সব কথা
ফুরিয়ে গেছে আজ,
মেরুদণ্ডহীন প্রাণীর মতো প্রহর গোনা,
বিফলতার বিষাদে
রাত্রি অতিদীর্ঘতর
তবে কেউ যেন ভয়হীন চিত্তে
ভোরের দিকে তাকিয়ে আছে
দৃপ্ত কণ্ঠে একটাই কথা ভয় নাই ভয় নাই।
রাতের কালিমা সরিয়ে দুহাত দিয়ে ধরে আনবে নতুন ভোর
দুপায়ে অন্ধকার পিসতে পিসতে
উঠোন পেরিয়ে,মেঠোপথ আল পথ পেরিয়ে
সে চলেছে দিগন্তে
একটুকু কৌপিন, উদোম গা
খড়ি ফোটা গায়ে ব্যার্থতা,হতাশা,পাওয়া না পাওয়া,লড়াই এর মানচিত্র আাঁকা সারা শরীর জুড়ে
কুমড়ো ফালি চাঁদ তাকে
আলোর সন্ধান দেয়
অজস্র জোনাকি দেখায় পথ
কোনো দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই তার
পথের দুপাশে প্লাসটিক ব্যাগ,বোতল,পরমানুবোমা,আগ্নেয়যাস্ত্র
সমস্ত বর্জ্য দুহাতে তুলে ভরে দিচ্ছে ডাস্টবিনে
কার্বন বাতাসের গলাটিপে,জুঁই ফুলের সুবাস বিলোয়
সর্ষে ফুলের রঙের মন নিয়ে
ক্রমশ এগিয়ে চলেছে
ওই আনতে পারে কেবল নতুন ভোর
সঙ্কটের কালে ওই একমাত্র সংকল্প নিয়েছে
(৩) দহন
আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দিয়েছি মুঠো মুঠো বীজ,
আাঁচল নিঙড়ে জল দিই তাতে রোজ,
অঙ্কুরোদগমের উত্তাপে গনগনে ওরা
সুতিকা গৃহের আঁশটে গন্ধে
মুখ ঢেকে ফিরে যায় ওরা।
অবলা নারী শঙ্খধ্বনিতে
জানান দেয় তার অস্তিত্ব
ঝুলে পড়া স্তনের বোঁটায়।
রক্তাল্পতায় ঘিরে থাকা ধূসর চোখে
মাখানো রয়েছে স্নেহ ও প্রেম
যেন হাজার ফাটল লেপা নিকোনো উঠোন।
মরা বিচুলির রোঁয়ায় গোটা গা দগ্ধায়
তবুও পুরুষ ভেবেছে
এক বুক গঙ্গায় নেমে ধুয়ে নেবে সব পাপ।
Comments
Post a Comment