গৌতম বাড়ই এর কবিতা

পরিচিতি---- জন্ম: ১লা জানুয়ারী,১৯৬৬ সালে শিলিগুড়ি শহরে। শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুলের প্রাক্তনী। পড়াশোনা বেড়ে ওঠা সেই পাহাড়তলীতে।বর্তমানে একাউন্টস অফিসার হিসেবে কর্মরত রাষ্ট্রায়ত্ত ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডে।চাকরিসূত্রে বাস কলকাতা শহরে। সাহিত্যের ভালোবাসায় লেখালিখি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মাধ্যমে।সতের বছর বয়সে প্রথম আত্মপ্রকাশ উত্তরবঙ্গের বহুল প্রচারিত এক দৈনিকে ছোটগল্পের মাধ্যমে।জীবনের বিভিন্ন ভাঙ্গাগড়ায় নিজেকে খোঁজেন বারবার। খোঁজেন মানুষের মধ্যে নিজেকে।" ধর্মহীন বর্ণহীন গণ্ডীবিহীন মহাদেশ বা এ পৃথিবী আমার দেশ।তাই ভাবি।এই ভাবনাই আজীবন ভেবে যাব। " -- কবির ভাবনা সরাসরি তুলে ধরলাম।  

আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে গৌতম বাড়ই এর একগুচ্ছ কবিতা 



১: মহাতীর্থের দেশে


মৌনীবকের মতন

পৃথিবীর সারস ঠোঁটে মিষ্টান্ন চাখা

চোখ থেকেও চেতনার গভীরতায়

মাছেদের জীবন চিনে নেওয়া

সব সন্তরনের গল্প নয়

মৎস্যকন্যার সাঁতার রূপকথায়

তোমার কাঙ্খিত রোদ

এ পোড়াটাই বৃথা

শব্দের ফুল আরও কিছু

পাখওড়া ছাই

নাইনোক্লক রঙীন হতে গিয়েও

হতাশহুটারে সরণীর মৃত্যুকাল

পুরোটাই কুদিন কুযামিনী

চেয়ে থাকে শতাব্দীর অগণিত লাশ

মহাতীর্থের দেশে চেয়ে থাকে তারচেবেশি

মন্দির মসজিদ গির্জার ধ্বনি।



২: চরম শূন্যতায়


অস্তিত্ব খোঁজাটাই সঙ্কট

এ প্রাণীদেহ ভ্রূণ নিয়ে নড়চড়

জঠর জ্বালায় ছিল কিছু অগ্নিদেব

মা প্রত্যহ বুকচিড়ে ভালোবাসায়

এ মুখে স্নেহধারা লেগে থাক।

অরুন্ধতী রাত্রির তারাদের দুধসাগরে

একটা নীল লেফাফা বিচ্ছিন্ন পাখি

খুলে ফেলি লহমায়

ধূর্জটি মেঘের বার্তা সাথে

জীবন মানেই অস্থি আর এক কলস ছাই

অথবা মাটির নিচে জমাহচ্ছে হাড়গোড়

ক্লেদাক্ত পোশাক ছেড়ে।



৩: একজন্ম ছক্কা


গতজন্ম অভিশাপ

একগাছা দড়ির সাথে শূন্যের ট্রাপিজ

ঋতবাক মায়াবী দুনিয়ায়

শব্দের বেড়াভাঙ্গা অনর্গল শব্দপ্রহর

ঝাঁপতাল

মহাশূন্যে ওড়ে আত্মা এক জন্মের খেলা


৪: বিগ্রহের খ


একটা ক্লান্তিহীন বিকেলের হাহাকার

চড়ুই সমুদ্রের বাড়ি

গোঁসাই ও যখন প্যায়ার মোহব্বত

বৈষ্ণবীর তখন আঙ্গুল ঘেঁটে ঘ

রসকলি কী কাটিয়াছে অনবদ্য!

মৈথুন চাতক বিন্দুতে চায় অহর্নিশি

বাতাসের পুবে ফাগুন আগুন জ্বালায়

মেঘ আমাদের চিরকাল এক খন্ড স্বপ্ন

বৃষ্টি অনর্গল মন ভেজায়

জাগতিক খ শূন্যতায় দারুচিনি বন

কৌতুহলী দেখে দিবাকর

সবুজ বনের ঝোপে আশালতা চৌধুরীর কবন্ধ

বিগ্রহ চিরকাল জ্বালা ধরায়



৫: ভালোবাসা ইতিহাস আলোকমালায়


চলে যাচ্ছো একা একা

কোন গোপন নেবে বলো?

রাধাচূড়ার মগ্নডালে তোমার ছায়ার ভাঁজ

ছায়া কখনো তরল হয়?

আমার নদীটি আজ টিনেজার

উড়ন্ত ঘূর্ণির ভালোবাসায়

বুক ছুঁয়ে দেখে উত্তাপ কতটা জটিল

হিমরক্তের সম্পর্ক স্থাপনে

কবরের ক্ষতস্থানে প্রলেপ দিয়ে আসা

কবর আর শ্মশান নদীটির মতন

বিষুবরেখার উপরে ফুলের বাগিচা

তবুও একা একা সীমাহীন যাচ্ছো চলে?

সংঘমিত্রা আটভাগ ভালোবাসা থেকে

একভাগ শুধু এ বুকে ছুঁয়ে থাক

বিশ্বাস ততটুকু

যতটুকু জ্বালাবে আলোর ইতিহাস মালা--


Comments

  1. খুব ভাল লাগল।অভিনন্দন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ রইলো।এ পরম প্রাপ্তি দাদা।

      Delete
  2. শব্দের সুন্দর ব্যবহার।

    ReplyDelete
    Replies
    1. শুভেচ্ছা শুভকামনা ও অনেক ধন্যবাদ রইলো।

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

শম্পা সামন্তর কবিতা

মোনালিসা রেহমানের কবিতা

বিবেকানন্দ দাসের কবিতা