ছাব্বির আহমেদের কবিতা

 


ছাব্বির আহমেদ(১৯৯৪): নদীয়া জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কাঁঠালিয়ার বাসিন্দা । স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির ইচ্ছে , পরে  মুর্শিদাবাদের তরুণ কবি আমিনা তাবাসসুমের সান্নিধ্যে  ধীরে ধীরে সাহিত্য জগতে প্রবেশ , লেখার পাশাপাশি পুরোনো দিনের গান শুনতে ভালোবাসে। প্রথম কবিতা 'সন্মান' প্রকাশ পায় মুক্তি সাহিত্য পত্রিকায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে কবিতা প্রকাশ পায় এবং এখনো বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের সঙ্গে যুক্ত আছেন।

আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে তরুণ এই কবির পাঁচটি কবিতা।  


১: আরাকান রাজসভার মিটিংয়ে



আজ আকাশের গায়ে চাদরে ঢাকা থাকায়

তুমি বলছো সাইটিকা বাত, মক্কা-মদিনার খেলাও হতে পারে

তাহলে অবনী ঘোষের বিদ্যুৎবামের দাম একটু কম হলো না কেনো?

শিয়াল-কুমিরের গল্পটা আমার জানা ছিলনা 

এখন নতুন করে আবার পড়তে হবে

তাই চায়ের কাপে চিনি একটু কম দিয়েছি।

এখন তুমি ফুটবল খেলবে নাকি ডেল কর্নেগির 'আমনিবাস' পড়বে, সেটা জানিয়ে দিলেই

আমি আরাকান রাজসভায় মিটিং বসাবো।

আরব্য রজনী কাহিনীর রহস্য উদঘাটন আমার দ্বারা হয়নি বলেই আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা ১২০০ মিটার

আর আমি সেই টাওয়ারের নীচে বসেই নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা পড়ছি।



২: জাপানের ফুজিয়ামা



জীবন্ত আগ্নেয়গিরির মতো কবিতার লাইন গুলো ইতিহাসের পাতা থেকে গলগল করে বেরিয়ে আসছে

ম্যাসিডনের রাজা আলেকজান্ডার যখন দুপুরে খাওয়ার পর ভাতঘুম দিয়েছেন 

তখন তুমি গড়ের মাঠে এসে একলা আমার জন্য অপেক্ষা করছো

ওদিকে আমি রাশিয়ার উঁচু পিলারের কথা ভাবতে ভাবতে তোমার কথায় ভুলে গেছি

ইচ্ছা ছিল বুলগেরিয়ার মাটিতে তোমার মূর্তি স্থাপন করবো, কিন্তু

রাত ৭.২৩ ফ্লাইট ছেড়ে দিয়েছে 

আর আমি গড়ের মাঠে  হাঁপাতে হাঁপাতে ছুটেছি তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে

তাই জাপানের ফুজিয়ামা দেখা আমার কপালে আর জুটলো না।



৩: সোজা আঙুলে ঘি ওঠেনা



ভেবে দেখছি ঘি-এর সমকক্ষ হতে পারলাম না

কেননা ভাতের মাড় নিছক কবিতা নয়

বেলা গড়িয়ে পড়লো

আমার অবস্থা এখন পেঁয়াজের মতো

কারা আমায় পিছু ডাকছে

ঝড়ের গতিবেগ সেই সময় ১২০ কিমি

কেউ আমাকে বাহবা দেয়নি তো 

মৃত্যুর স্বাদ আমি কখনো পাইনি 

কেননা ভোর বেলায় কাকের আগমন দেখে আমি মুদিখানা বাজার করতে গেছি

শুয়োপোকা ও হরিণ মাঠে চরছে না

তুমি অনেক বেলা পর্যন্ত শুয়ে থাকলেও আমি বলবো না সুগারের রুগী

বড়াই এর ভূমিকায় আমাকে হয়তো খুব মানাবে

কেননা আমি আজ পান খেয়েছি

শুনেই আবার এটা ভেবো না

যে প্রজাপতি আর পিঁপড়ে একই গোত্রের প্রাণী।



৪: বীরবলের আহ্বানে টমাস রো



বীরবলের নাম পাল্টে যদি এখন তানসেন রাখি

তবে টমাস রো-র বিছানায় মাদুর পাতা হবে না

আর মেগাস্থিনিসও হয়ে উঠবে প্রেমিক 

কেননা তুমি অমরকন্টকে কিৎ কিৎ খেলতে শুরু করেছ

এখন জেগে থাকাটাই বড়ো কঠিন

যদি ৫০% ছাড়ে ফ্লিপকার্ট থেকে একজোড়া জুতো কিনতাম

তাহলে আকবরের রাজসভায় আমাকে গান গাইতে হতো না

কাল অঙ্কুর লবণের দামে কষ্ট কিনতে গিয়ে দেখছি তুমি 

তেল মাখছো না 

তাই সৌদি আরবের রাস্তার উল্টো দিকে আমাকে গাড়ি চালাতে হচ্ছে

মোঘল সভায় টমাস রো কে হাজির করানোর উদ্দেশ্য।



৫: আরোগ্য থেরাপি



হ্যারিকেনের ফিতেই অন্ধকার মাপায়

ঘড়ির কাঁটাতে বারোটা বেজে পঁয়তাল্লিশ 

যার ফলে ঝড়ে আম পড়া অবশ্যম্ভাবী


নিশ্চিন্ত পুর থেকে বিভূতিভূষন দাঁড়িয়ে দেখলেন

করমচা গাছে একটিও পাতা নেই

তাই অপু মায়ের কোলে ঘুমিয়ে


থার্মোমিটারে দুর্গার জ্বর ১০৪ ডিগ্রি

তবুও বিশিষ্ট কবিদের শব্দ মিল খুঁজছিলাম আমি

কেননা পড়ার টেবিলের এক গ্লাস জল রাখা


এতো উতলা কিসের

জীবনানন্দকে ভর করেই কি বিভূতিভূষনের আগমন,

তাবাসসুম আমাকে নকলবাজ বলায়

সেটিকে প্রদীপ জ্বেলে বরণ করে নিলাম।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

শম্পা সামন্তর কবিতা

মোনালিসা রেহমানের কবিতা

বিবেকানন্দ দাসের কবিতা