মানসী বিশ্বাসের কবিতা
পরিচিতি : কার্গিল যুদ্ধের কিছু পরেই জন্ম, বড় হয়ে ওঠা প্রকৃতিকে দেখতে দেখতে । বর্তমানে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে যাদবপুরে মাস্টার্সের ছাত্রী। পিওর সায়েন্সের স্টুডেন্ট হয়েও বাংলা'র প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা রয়েছে, যা আজীবন থাকবে।
লেখালেখি শুরু চার বছর আগে, লিটিল ম্যাগাজিন ও কিছু দৈনিক পত্রিকায়। আপাতত কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ নিয়েই জগৎ। রীডার, স্পিকার, পজিটিভ মাইন্ডেড।বর্তমানে ' মুক্তচিন্তন ' ম্যাগাজিনের সম্পাদনার দায়িত্বে।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে মানসী বিশ্বাসের ছয়টি কবিতা।
১: অকুঞ্চক
মুক্তির আঁচলে রক্তস্রোত,
ঘিনঘিনে অকথ্যকথন মিথ্যে স্তূপের আখড়া হয়ে
ই ইকুয়ালস টু এম সি স্কোয়ারের সূত্র বানায়
বালিশভেজা কান্না নিয়ে ঘুম আসে
একটা ঈগল, একটা শকুন, একটা বাঘ
নখে নখে চিবিয়ে খায় ইজ্জত
পারদের অকারান্তে রাত্রি নামে জানালায়
পা ছোঁয়া দিঘি'র জল
বাস্প হয়ে উলু দেয়
আমাদের গরম ভাতে কাঁচা ঘুম আর একফালি চাঁদ
--- বিভেদ ঘোঁচায়।
২ : গাঁ
আমাদের বুকে জমা কাজলা দিদি
পুকুর পাড়ে'র উচ্ছে চারা,
নেতিয়ে পড়া কল্মি-শাকে
ঘুম জাগে
রাত নামলে দিঘি'র পাড়ে আমবন,
অন্ধকারে ওমের শিখা,
জোনাই খোঁজা নাভিতে ফোটা জবার কুঁড়ি
গাঁয়ের নদী শুকিয়ে গেছে অনেকদিন
সঙ্গমেতে পড়েছে ভাঁটা,
লাল গোলাপের কাঁটায় জমা রক্ত
মোছে দীর্ঘশ্বাস!
অংশে অংশে লেগে থাকে একটুকরো ঈশ্বর,
বুক থেকে খসে পড়ে জামা,
নতজানু বেইমান গিলে ফেলে সম্ভোগ...
৩ : পরকিয়া
বর্ষা মুখর রাত
অভিসারিণী বুকের মাঝে ভয়কে করে কাত!
পথের মাঝে দেখা
চুপ-দাঁড়ানো অভিসারিণীর স্বপ্ন গুলো আঁকা ---
ওদের খবর দিও
পথচলতি মানুষ গুলোর সংলাপেরই বোল-ও
কানের কাছ দিয়ে
ঘর সংসার সব ছেড়ে আজ মনের মন্দিরে –
আস্তানা সব যতো
পাগল হয়ে প্রেমের খোঁজে ঘুরছে শুধু ততো...
আর থেকো না একা,
প্রাণসখিনী - প্রেমিকা তুমি, তুমি ছাড়া একা।
৪ : শ্মশ্রু
বনজ তেল মাখতে মাখতে
সমার্থক হয়েছে কামিনী আর নিষ্প্রভ আগুন
কোন এক আপেক্ষিক তাপে
ঝলসে গেছে বছর ষাটের সময়
মিথ্যে হয়েছে
গোলাপি ঠোঁটের আদর,
কুঁচকে যাওয়া সমবয়সী প্রেম
ভোজনে রাখা শাকান্ন,
হাতের নখে আর অর্পণ হয় না
মেদুর চোখাচোখি
বৃষ্টি ধুয়ে নিয়ে গেছে আমাদের মন
স্বাধ্যায়ে খুঁজি ভেজা চুল
শ্মশ্রু চেনায় পুরনো অভ্যস্ত ছোঁয়া...
৫ : কোজাগরী
শীতঘুমে জড়ানো অন্ধকার
শিউলি'র দল চলে যায় বাড়ি
খুব তাড়াতাড়ি
জোনাকি বিহীন রাতে মাদকাসক্ত চাঁদ
অ্যানিমেশনের ছবি আঁকে
লজ্জায় মুখ হয় অবনত
শ্যামলী মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে যায় মধ্যরাতে,
যৌনপল্লী থেকে ভেসে আসে ঠাট্টার সুর
রাঙা পা ঠেলে শ্রী এগোয় অজানা ভবিষ্যতে,
রাজস্থানি মা জলে গুলে রাখে নুন,
প্রার্থনা করে বাড়িতে নুনের অভাব যেন হয় প্রতিরাতে...
শিউলি তলা শুকোয় নি,
নেভে না সন্ধ্যার প্রদীপ
বিকিকিনি আঁকা আলোতে দাঁড়িয়ে
উলঙ্গ নৃত্য করে শ্বাপদের দল
প্রেয়সী'র বুকে মাথা রেখে কোজাগরী আসে
ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়েও কোজাগরী আসে
কেড়ে নেওয়া হয় বুকের আঁচল,
ফুল পড়ে থাকে মাটির মূর্তিতে
জীবন্ত লাশ, চাহনির পাশে
৬ : এক্সক্রিশন
বিষক্রিয়া দেখা যায় এমন ঠোঁটে
আমাদের জন্ম হয় বারবার
ক্যালোরিমিটারে মাপা হয়
কত তাপ হল বর্জিত
নিয়ন্ত্রণরেখার শৈত্যপ্রবাহে
তাপসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয় বৃক্কের বক্ষে
এফিড্রিন এসেছিল কাজে
ঝরাপাতা কান্না ঢাকে সহজে
মেঘমুক্ত আকাশ
অলকানন্দা হয়ে বয়ে যায়
শীতের আমেজে...
আমাদের বুক বাঁধা
টিউবারকিউলোসিসে
প্রেমিকার জলসম 50 g হলে
তাপগ্রাহিতা হয় সুডৌল স্তন
Comments
Post a Comment