ইউসুফ মোল্লার কবিতা
পরিচিতি::
জন্ম: ৭ নভেম্বর,১৯৯০
দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিং- এ জন্মগ্রহণ করেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে ট্যাংরাখালী হাইস্কুলের একজন শিক্ষিকার সহযোগিতায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের "কৃত্তিবাস" পত্রিকায় "হাঁদাভোঁদা" নামে একটি ছড়া প্রকাশের মাধ্যমে সাহিত্যে প্রবেশ। তারপর একে একে দেশ, আনন্দবাজার, একদিন, প্রতিদিন, কলম, বিভিন্ন লিটিল ম্যাগাজিনে নিয়মিত লিখে চলেছে। "বর্ণিক" এবং "স্বপ্ন সন্ধানী" নামে দুটি সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক। ছড়ার জন্য জেলার প্রথম হওয়াতে "অজগর সন্মান" দেওয়া হয়েছে। "মনোজ মিত্র: পাখি" এবং "থার্ড থিয়েটারে বাদল সরকার" নামক দুটি বই প্রকাশ। কাব্যগ্রন্থ: নীল মলাটের খামের চিঠি। বাংলা উইকিপিডিয়ায় নিয়মিত লেখালেখির জন্য "উইকি পদক" লাভ। কবিতার পাশাপাশি গল্প, প্রবন্ধ, ডায়েরি, নাটক নানাধারায় নিয়মিত লিখে চলেছেন। যৌথ সম্পাদনায় অনেক বই প্রকাশ করতে চলেছেন। 'ইউসুফ মোল্লা' নামে একটি ব্লগ আছে, যেখানে বাংলা সাহিত্যের নানা গবেষণাধর্মী লেখা পোস্ট করা হয়।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে তরুণ কবি ইউসুফ মোল্লার একগুচ্ছ কবিতা।
১: বেদব্যাসের নতুন জীবন
ওই ক্যাকটাস কীভাবে সংগ্রহ করে তার রস,
ওই উট কীভাবে ধূ ধূ বালি পার করে,
কীভাবে মিথ্যে হয়ে যায় মরীচিকা,
ভাবতে ভাবতে লেখেন নতুন করে বেদব্যাস।
ওই সুউচ্চ পর্বত কীভাবে নিঃসঙ্গ জীবন অতিবাহিত করে,
কীভাবে সতন্ত্র প্রহরীর মতো সারারাত জেগে থাকে,
সম্পর্কের বাঁধন মজবুত করতে কীভাবে নিজের-
দেহের মেদকে একটু একটু করে গলিয়ে ফেলে।
সম্পর্ক প্রসারিত হয় অনন্ত জলরাশির সাথে।
এ বাড়ির বৌমার হাতে অনেক দিনের শাঁখা,
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে খুলে রাখে।
কিন্তু হাতে একটা সাদা বন্ধনী পড়ে গেছে,
যা ইচ্ছে হলেও কালো করতে সাহস পায় না।
বেদব্যাসও নতুন করে লিখবে বলে,
সংসার জীবন আবার শুরু করেন।
২: কবি
(উৎসর্গ: কবি শ্যামল কান্তি দাশের জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য)
আমি দূরদর্শন দেখিনি আজও,
শুনেছি; অনেক কিছু রয়েছে বানানো।
কিন্তু, আমি আমার প্রিয় দাদাকে দেখেছি,
শুনেছি তাঁর মুখে কবিতা,
যা পৃথিবীতে আগে কেউ কখনো শোনেনি।
আমি পাহাড়ের কোলে যাইনি কখনও,
যাইনি নদীর তীরে--
ঝরনার জলে পাথর ভাসেনি,
পৃথিবী যাইনি আজও প্রকৃতিকে ভুলে।
দাদার মাঝে হয়েছি বড়ো,
ছাড়েনি হাত কখনো!
৭০ নয়;১০০ তে হোক জন্মদিনে পা বাড়ানো।
৩ : প্রকৃতি-সন্তান
তোমার ছবি স্বচ্ছ কাঁচের জলে দেখছিলাম,
তুমি তাকিয়ে ছিলে আমার দিকে।
একটা পাখি উড়ে গেল পাশ দিয়ে,
ফুল ঝরে পড়লো সেই জলে ---
তোমার ছবি ভেঙে গেল মনের আয়না থেকে!
তোমার সন্তান আজও আমার সাথে খেলা করে,
ঘাস-পাথর সাথে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
মাঝে মাঝে ভুল করে, আয়না-জলে ঢিল ফেলে।
তোমার ছবি কেঁপে ওঠে,
তবুও ওকে কিছু বলিনি আজও।
তুমি পাখি হয়ে ফিরে এসো,
তুমি ফুল হয়ে ফুটে থেকো,
তোমার সন্তান পাখি দেখে, ফুল তুলে,
ঘুমিয়ে যাক প্রতি রাতে।
৪ : ডুকরে ওঠা কান্নাগুলো
আমার বিয়ের প্রথম রাতেই বৌকে দেখেছিলাম,
আতর ছড়িয়ে সমস্ত ঘর সুগন্ধ করতে।
একটা বছর কেটে গেল....
একটা সন্তান এল তার কোলে।
আজও প্রতি রাতে আতর ছড়িয়ে রাখে মেঝেতে।
খিল দেওয়া দরজার ওপারের পড়শীগুলো,
সন্তানের কান্নার আওয়াজ শোনে।
মাঝে মিশে যায় ডুকরে ওঠা কান্নাগুলো!
Comments
Post a Comment