রঞ্জনা ভট্টাচার্যের কবিতা
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর রঞ্জনা ভট্টাচার্য পেশায় একজন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের পড়ানো এবং কবিতা হলো তার প্যাশন।।
রঞ্জনা এই প্রজন্মের একজন মৃদু ভাষী,দরদী় হৃদয়ের কবি। তাঁর অন্যধরনের শব্দচয়ন, রবীন্দ্রনাথের প্রতি ভালবাসা এবং জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডে ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংস্পর্শে লব্ধ অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হয়ে ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই সময়ের বাংলা সাহিত্যে নিজস্ব স্থান করে নিচ্ছেন ধীরে ধীরে।
রঞ্জনা খুব ভাল একজন মডারেটর, গায়ক এবং নৃত্যশিল্পী তবে তাঁর প্রথম প্রেমটি কবিতা।
শ্রেণি সংগ্রাম, বেদনা এবং রোম্যান্স প্রায়শই প্রতিবিম্বিত হয় রঞ্জনার কবিতায়।।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবি রঞ্জনা ভট্টাচার্যের একগুচ্ছ কবিতা
১ : রোজনামচা
সংসার আর একাকিত্বের শ্রেণীসংগ্রাম, খণ্ড যুদ্ধ;
একটা চিলেকোঠার ঘরে বন্দি
কথা,
শব্দদের ধর্মঘটের সাক্ষী
মহাকাশের দোতারা আর মেঘের খোল করতাল,
যতিচিহ্ন পাখির মতো উড়িয়ে দিয়ে,
পিরামিডে লুকিয়ে রাখি বাউল গান
সময় আমার বুকে পুড়ে নষ্ট মেয়ে
অগ্নি আর বরুণ শ্রমের সহযোগান_
মাটি, জলের সাথে তাদের সখ্যতা,
তা বেশ তা বেশ, শূন্যে ওড়ে ক্লান্ত মুঠো,
চিলেকোঠায় একচিলতে বন্দি কথা
তক্তাপোশে অশ্রু কেটে তক্ষা বানায়।
(কাঠ কেটে কুটে, কুঁদে বানানো শিল্প বস্তু তক্ষা। ঋণ-বেদের কবিতা_গৌরী
২ : বদলে যায়
এবং আমি কাঁদছিলাম,
কারণ শরীর বদলে ছিল,
আর বদলানো শরীরের পেটেন্টের
জন্য গেছিলাম কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছে,
ঘুমন্ত বুদ্ধের ঘুম ভাঙিয়ে
জানতে চেয়েছি শরীরের শেষবেলার কবিতা_
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত অবধি
কাঞ্চনজঙ্ঘা আমার বদলে যাওয়া
শরীরে লিখতে লাগলো
ওম মণি পদ্মে হুম_
এবং আমি আবার কাঁদলাম
৩ : চালচিত্র
ধুঁকতে থাকা বালিশে মাথাব্যাথা
এঁকে রাখে নির্ঘুম রাতের চালচিত্র;
নিঃস্ব হওয়া দীপাবলির
কাজলকালো গরিমায়
দরমা বেড়ার ফাঁক দিয়ে
ঢোকে একফালি যৌনতা_
পাগলামি ছেঁড়া কাঁথা মুড়ে
শিকারির মতো সামনে এসে দাঁড়ায়,
তারপর আল্পনা আঁকা হয় শরীর জুড়ে অলক্ষ্মী বিদায়ের পর,
এটুকুর পর সকালে কলের জল,
এঁটো বাসনের ডাঁই,
ভাঙা রিকশা অস্ফুটে মুখোশ পড়া
মুখে আওয়াজ তোলে'দুগ্গা, দুগ্গা'
৪: ঘুম
এখনই জাগবার প্রয়োজন নেই,
ব্যর্থ না হবার জন্য ঘুমিয়ে থাকো,
কার্গিল সীমান্তে যারা জাগে
তাদের ছায়া টিমটিম করে হ্যারিকেনের আলোয়,
ইতিহাসের পাতায় লেখা তাদের
জল পিপাসার কথা, জ্যোৎস্না ভেজা কফিন চাঁদের কান্নার মৃতদেহ _
তারারা সব সীমান্তে মা, ঠাকুমার গল্প শোনায়, আল পথ দিয়ে ছুটে আসা প্রেম বরফ কেটে কেটে স্বপ্নকে পথ করে দেয়,
তোমরা বরং যুদ্ধ যুদ্ধ স্বপ্ন দেখো
এখনই জাগবার প্রয়োজন নেই।
দূর্দান্ত এবং দুরন্ত।এভাবেই এগিয়ে চলুক।অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইলো।(গৌতম বাড়ই)
ReplyDeleteভালো লাগল রঞ্জনা।
ReplyDeleteএবং
ReplyDeleteরঞ্জনার কবিতা
আকাশ থেকে নামিয়ে আনে মুগ্ধতা ....💞💞💞💞💞💞💞💞
খুব ভালো কবিতা, রঞ্জনা দি।সুন্দর ....
ReplyDeleteরঞ্জনা খুব ভালো লাগলো তোর কবিতা। তুই আরো এগিয়ে চল এই প্রার্থনা করি। ভালো থাকিস বন্ধু।
ReplyDelete