সাহিন আক্তার কারিকরের কবিতা
সাহিন আক্তার কারিকর , পিতা মোস্তাফা কারিকর , মাতা জাহিরা বিবি । টাকি গভঃ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। উত্তর 24 পরগণার হিঙ্গলগঞ্জ থানায় বাড়ি। মূলত জিরো বাউন্ডারি WhatsApp group থেকেই কবিতা লেখার উত্থান। সহজ সরল ভাষায় অনুভূতি প্রবণ কবিতা হৃদয়ের অন্দরমহলে তৈরি করে আবেগ । এই হল সাহিনের কবিতা। সুন্দরবনের প্রতন্ত গ্রামে বেড়ে ওটা এই তরুণ কবির কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কাব্যগ্রন্থের নাম 'Sin _/ ডালিম '।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে তরুণ এই কবির একগুচ্ছ কবিতা
(অ)
২টি মৃত শালিকের সংসার
১ অথচ...!
নষ্ট ডিমের মত চেয়ে গেছি উষ্ণতা
কখনও কথা রাখেনি পথ চলতি নাগর
শুধুই শরীরের উপর দেখেছে পালক রং রাত্রির
নোঙর করা জল সন্ধি স্থলে খুঁজে নিচ্ছে
বাঁচার রসদ, রক্ত পচা হৃৎপিন্ডের খড় ঘরে
মাঠ, উন্মুক্ত যোনি
প্রজন্মের চত্বরে বিক্ষোভ
ঠিক এভাবেই আর একটি অসুস্থ সংসার পেতেছে
দুধওয়ালা নদী চিবুকে চৈত্র মাসে
তুলো পেঁচানো অভিমান সাঁতার জানে না বলে
ডুবে যায় ভাঙা স্লেটের অক্ষরে
অস্পষ্ট অ আ কালরাত নেমেছে অন্ধকার
তারপর
হামাগুরি হরতাল
নগ্ন নগর বন্দর বাসভুমি ছেড়ে
চলে যায় অজানায়, কিছু তারা খসে
কালপুরুষ = সুখ তারার সন্ধ্যায়
আমি তো নদীতে দেখেছি
নিরামিষ জ্যোৎস্নার কাচ্ ভাঙা যৌবন
২ আকাশ... !
আমি একটি বারও প্রশ্ন করিনি
সবে পাহাড় ডিঙিয়ে সমুদ্র পেয়েছি
আমি প্রথম নই
কত নাবিক ভেসেছে ভরা বৈশাখে
কেউ ফেরেনি উর্বশী সাথে পাতা পোড়ানো উনুনের পাশে
কিন্তু কথা রেখেছি বেনারসির প্রথম সঙ্গমে
আকাশের সাথে সন্ধি করেই
ছেড়েছি বাসর অমূল্যের অভিশাপে
হাত বেঁচে থাকার নগ্ন তরবারি
অবশেষে
প্রলয়ংকর নারী মেদ হীন গায়ে লিখেছি
বন্ধী দেওয়ালের অভিসার
দেখছি চাঁদের বীর্যস্খলন কলঙ্ক
কেউ মেনে নিতে পারিনি প্রেমিকার শেষ উত্তরের সমাধান
কবে কখন কোথায় কিভাবে কেন কার
আশীর্বাদে
তুমি ঈশ্বরী পাবে ?
(আ)
এবং নয় সুতরাং মানুষ
প্রতিটি রাত জাগি বেকারত্বের মত অন্ধকারে
জানি অমঙ্গল হবে না
কেননা কেউ বিড়াল দেখতে পাইনি।
নিছক নাছোড় বান্দার মত
চিৎকার করে জানিয়েছি আমার ও একটা পেট আছে
অবিকল বাতাসের জল রঙ আর্ট গ্যালারি
শ্রাবণের বজ্রপাতের মত ঝলমলে
অবশ্যই
টিকটিকি এখনও ডাকেনি
তাই সঠিক কিছুই বলতে পারলাম না
কি জানি আমি বেঁচে আছি তো
বাঁচার মত করে
না কি সবটাই অভিনয়?
... মানুষ
নিশ্চিত তুমি বলবে অভিনয়
সুতরাং নিজেই নিজেকে জোকার বানালাম
তুমি হাসলে অথচ মেকআপের আড়ালের বিপরীত
মানুষ টাকেও চিনলে না
কিন্তু
তোমাকে ঠিক চিনেছি
হাসির খোরাক পান্তা ভাতের স্বাদ
(ই)
অকর্ম
দীর্ঘদিন একটি মৃত প্রায়ই আকাশের গায়ে
গাঙ ক্লান্তির রং দিয়ে
তৈরি করছিলাম রাজ পথ
সন্ধ্যা হল, নক্ষত্র এখন উঠেনি
আমার কাঠ কয়লা পেনসিল যৌবনের ভিতর
একটি উইপোকা জোনাকির সন্ধান দিল
আর জোনাকি প্রজাপতির
বিবর্তন - হল ঠিকই, তবে অন্য ভাবে...
(ঈ)
পরিধি
কলমীর স্বাদ আর কুমারীর জল সেদ্ধ উনুনের কৃত্রিম উন্নয়ন, পুড়ে ছাই হয়ে যায়
হাড়িয়ার বাটিতে নেশার বড়ি গুলছে
বিধবা ভাতার সন্ধানী দম্পতি
কেউ কাউকে নিয়ে সন্তুষ্ট নয়।
রাত হলে ভাড়া করা খুচরো পয়সার ঝনঝন শব্দে
মা হওয়ার অজন্ম কান্না
বন্দি হ্রদের পিচ গলা শরীর শুকাই রোদে
শহুরে রেললাইনের শুকনো নারকেল পাতায়
একজন আলোর পরিধি মাপে পৌরাণিক প্রেমের অন্যজন নীরব অন্ধকার।
(উ)
উদবাস্তু নাগর
চলমান হাঁটুরে হাটে নেশা বিক্রি করছে রানার
নাগরিক দেশ - লাই (এর) গহ্বরে বারুদ জমা ক্ষোপ
গন্ডি ছাড়িয়ে নিশ্বাস ফেলছে সবুজায়ন সতীর আঁচলে। আজকের রৌদ্দুর অনেক বেশি মোহাবিষ্ট
লাভার রসময় লোলুপতা নিয়ে ঘুমাচ্ছিল
ছায়ায় দলছুট কৃষ্ণবর্ণ হরিণী কোমল ঠোঁট দিয়ে
ছিঁড়ে ফেলছে দুর্ব্বা ঘাসের দুধ সাদা যৌবন।
কুয়াশার গাঢ় সিগারেটের নিস্তেজ নিঃশ্বাসে জেনেছি ভেঙে পড়া মৃত্যুর চিরন্তন নেশা।
নাবিক অন্ধদেহের ভিতরে লাল পতাকার আলপনা অবজ্ঞা করে
নৌকায় চড়ে নর্তকী মেলায় হেঁটেছে সারা রাত
অথচ, কাক ডাকা ভোরে কর্ম চাই...
(ঊ)
শান্তি
কবির জলসায় কুমড়ো বড়ির ছন্দে লিখে যাই বোলতার ব্যর্থতার শেষ সঙ্গম
ঝাড়বাতির হৃদয়ের আগুনে ঢেকে দিই মাপা স্কেলের জল রং ছবি
দেওয়ালের ফাঁকে গুঁজে দিই পেরেক বিদ্ধ মালির মালা
যারা সরল রেখায় দাঁড়িয়ে লড়াই এর আয়োজন করে তারা সব ব্যর্থ
তুমি ইতিহাস লেখো আর একমাত্র মানুষই পারে ইতিহাস লিখতে
বঞ্চিত বলাকা ঝাঁক বাঁধে বলেই হয়তো আকাশ ফিরে পায় যৌবন আর চাঁদ ছুটে যায় জোনাকির অন্ধকারে
ভূতের কোরাসে ওঝারা এভাবেই জয় লেখে...
সবগুলোই ভালো লাগলো
ReplyDelete