শ্রাবণ কয়ালের কবিতা
জন্ম: 4/5/1995 সালে
বাসস্থান :দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলার অন্তর্গত লক্ষীকান্তপুর সংলগ্ন এলাকায়।
সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালিখির চর্চা।প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় 'কচিপাতা' পত্রিকাতে তারপর ধীরে প্রাঙ্গণ,কবিতা কুঠির, পোস্টম্যান,অর্ক,সৃজন সাহিত্য প্রয়াস,পথচলা ফাউন্ডেশন,নবপ্রভাত ওয়েব ম্যাগাজিন,এছাড়াও কয়েকটি পেজবুক পেজে।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে শ্রাবণ কয়ালের একগুচ্ছ কবিতা।
(১) অহংকার কেন!
---যদি বলি ভালোবাসি, কি উত্তর দেবে তুমি?
--না
--কেন ,কালো বলে!
--বলতে পারবো না
--যদি বলি বিয়ে করতে চাই
--কি করো কি শুনি?
--ওই তো শপিংমলে জব
--বাবা রাজি হবে না
--তুমি?
--সরকারি জব হলে চেষ্টা করতাম
--আগে কি প্রেম ছিল?
--না
--একটা ছেলেকে যে হাত ধরে ঘুরতে দেখলাম
--ওটা x
--বিয়ে হলে আমি বুঝি y
--হু
--তুমি কি করো
--এবছর বি.এড কমপ্লিট
--চাকরি পাবে?
--জানি না
--আশা রাখো
-না
--কেন?
--সরকারের যা অবস্থা
--আমি পাবো কেমন করে!
--জানি না
--চাকরি ওয়ালা চাই কেন?
--আমি সুন্দরী তাই
--রূপ চিরকাল থাকবে?
--না
--তবে অহংকার কেন?
(২) বাস্তুহারা গাছ
গাছেদের ঘর নেই ফুটপাত বাসি।
গাছ পাখি ভালোবাসে পাখি গাছ।
সব গাছ মানুষ ভালোবাসে সব মানুষ গাছ নয়।
পাখিদের নির্দিষ্ট ঘর নেই সব গাছ ই ওদের ঘর।
সব গাছে হাওয়া বাদে হাওয়ায় সব গাছ ভাঙে না।
গাছ বিমান দেখে হেঁটে যেতে দেখে মানুষ
অথচ নিজেই স্থবির।
মানুষের মতো পাখিরা হাঁটে।
পাখির ডানা আছে ধরতে গেলে পালাই।
গাছ পালাতেও শেখেনি।
জন্ম থেকেই অনাথ।
সার্ভের সময় কেউ জিজ্ঞাসাও করেনি বংশ পরিচয়
ভুলবসত ঠিকানা লেখা হয় ফুটপাত।
সে বছর সার্ভের সময়
প্রত্যেক'কে ঘর দেওয়ার কথা।
একটা দল করলেই ঘর পাওয়া যায়।
ঘর পেতে হলে করতে হয় জেতা দল।
গাছ হারা দলের।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ওরা উদ্বাস্তু।
গাছেদের জায়গায় এখন বড়ো বড়ো অট্রালিকা।
(৩) কবি অথবা খেলোয়াড়
একটা কবিতা না লেখা অব্দি কবি নই
কিছু শব্দ ঠোঁটে কিছু মাঠে
ছেলেরা ফুটবল খেলছে,
ওই তো দু 'একটা শব্দ এ প্রান্ত থেকে অপ্রান্ত ছুটছে
একটা গোল দেওয়া যায় কি না ভাবছি
বিরোধীপক্ষ বেশ পারদর্শী
উপন্যাসের থেকে তুলে আনছি শব্দ
এবার বোধয় একটা কবিতা লেখা যেতেই পারে
রুমালটা যে কোথায় রেখেছি, ভাবতে গিয়ে
হোঁচট খেলাম, শেষ পর্যন্ত কবিতা লেখা হলো না
হতে পারে শব্দগুলো পাখির মতো হঠাৎ কিচিমিছি করছে
শব্দের ভারে একটা কবিতা তখন না লিখে পারা যায় না
আমাকে বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকতে হচ্ছে
রেফারির চোখে লাল কার্ড দেখেছি
শুধু একটা সুযোগের অপেক্ষায়
যতটা সম্ভব ফাউল না করে খেলা যায় কি না দেখছি
একটা কবিতা না লেখা অব্দি
একটা গোল না দেওয়া অব্দি থাকতে হবে মাঠে
যদি একটা কবিতা লেখা যায় ,যদি একটা গোল
তবেই লোকে বলবে জাত কবি অথবা খেলোয়াড়
(৪) যৌনতা
তখন ঘনিয়ে এসেছে সন্ধ্যা
দু' চারটে মৃত্যু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেললাইন কিংবা রাস্তার পাশ
একটা বিভৎস চিৎকার কুন্ডলি পাকিয়ে উঠছে অলক্ষ্যে
সূর্য মৃতপ্রায়, কবরে আর্তনাদ করছে নিষ্পাপ গোধূলি
সাদা কাগজে এফাইয়ার লিখছে ধর্ষিতার অনুগামী
নিকষ কালো শূন্যতা ভেদিত অন্তরাত্মার ক্রন্দন শুনছে না কেউ
শহরের বুকে মাথাচাড়া দিচ্ছে অপরাধ
মাফিয়াদের আঁতুরঘরে লালিত হচ্ছে যুবতীর যৌনতা।
Comments
Post a Comment