সুদীপ ঘোষালের কবিতা

পরিচিতি- পূর্ববর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরে বাস। জন্ম পূর্ব বর্ধমান জেলার বড়পুরুলিয়া গ্রামে। স্কুলজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু।কবিতা লিখতে ভাল লাগে, নিজের মনের কথা বলা যায়।

সুদীপ ঘোষালের কাব্যপুস্তিকা হল ঝরা ফুলের গান,আনন্দের একতারা,সাদামেঘের উড়ান ও যখন তুমি মৌন হলে।কবিতার ভালমন্দ পাঠকের হাতে।কবি ও কবিতা,হ্যালো টেষ্টিং বাংলা কবিতা,আরম্ভ,কবিশেখর,কৃতিএখন ওয়েব,কৃত্তিবাসী ওয়েব, তথ্যকেন্দ্র ও আরও নানা পত্রিকায় নিয়মিত কবিতা লেখেন।পেশা- শিক্ষকতা। 

আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির নয়টি কবিতা 


 ১: পুনর্জন্ম


মায়াময় মাদকতায় ভাসে জীবকুল

প্রথামত ভাসে চিতাভস্ম নাভিকুন্ডলি

আমিও ভেসে চলেছি উদ্দাম এক মূর্খ জগতে

সেখানে অহঙ্কার লিপস্টিক আঁকে  নেশায়

ভগ্ন মনোরথে কাঁদে যুধিষ্ঠিরের ভাবনা...

হংস মিথুনে চলে পুকুরজীবন

ছেঁড়া শালুকের দলে, গ্রীষ্মের শুকনো দাবদাহে

আবার পুকুরের কঙ্কাল, ফুটিফাটা হয় গভীর তল

আশা দিয়ে বর্ষা ভাসায় জীবনের স্পন্দন...


২: প্রবাহ


একটা পাগল দেহ অনবরত হস্তমৈথুনে ব্যস্ত

পৃথিবী বেঁধে চলেছে চুলের ফিতে,রঙ বেরঙের

রাস্তায় ঘাসের শরীরে পথরেখা মিলিয়ে যাচ্ছে

একটা সবুজ বন্ধনে বাঁধা পরে শিশির মায়া

একদিন গ্রাম্য বনলতার রাণী শিখেছে শহুরে বিলাপ

ক্ষয়ে যাওয়া শ্যাওলা শরীরে রিরংসার ছাপ

আর কতদিন নিজেকে যোনির আড়ালে রাখা

জেগে থাকে বদ্ধ পুকুরের ঘুরপাকে নিয়তির খেলা

তবে কি থেমে যাবে সভ্যতার বেহাগ,ধুলোয় গড়াবে বাঁশীর ভুল

ইতিহাস হবে সবই থেকে যাবে অনন্ত গোধূলি

একদিন দেখো, ফোর জি তে জমবে ঝুল...


৩: বৃদ্ধাশ্রম 


দ্যাখো আমাদের মানব সমাজ,বৃদ্ধাশ্রম

কতটুকু হিসেবে শোধ হয় পিতৃঋণ

কতমূল্যে মাতৃঋণের মায়া কাটে

হিসেব মেলায় ঋণী আজন্ম, বোঝে না প্রবাহ...

একদিন তুমিও কড়ি নিয়ে খেলবে আত্মজের সাথে

সেও নেবে তোমার কাছে বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা

ছেঁড়া, হলুদ বিবর্ণ কাগজ দেঁতো হাসি হাসবে কৃতকর্মের দিকে

অসহায় তুমি ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ছুটবে বৃদ্ধাশ্রমের দিকে...


৪: প্রকারভেদ 


পরশের প্রকার ভেদে অনভূতিগুলো বেঁচে ওঠে নতুনভাবে

কি সুখে পাতা দোলে সে জানে, কিছু লোক শেখে

কোন প্রেমে শরীর স্নিগ্ধ হয় বসন্ত জানে

কখন জেগে ওঠে প্রাণ গ্রীষ্ম জানে

কি খেলায় সৃষ্টি চলে বর্ষা জানে

সব খেলা শেষে ঋতু শেষের দিকে টানে

সকলেই কিন্তু শীতের পরশে ঠান্ডা হতে চায়,শীতল হবেই...


৫: শঙ্খ.                


প্রেম এক ইচ্ছের বন্ধন,

চিরকাল  জাগ্রত কাম বন্ধনে

সাপের শঙ্খ লাগা,দীর্ঘ যৌনতা

নবীন সুরে গেয়ে যায়

সোহাগী কাঠের বাঁশি  

ভুলে যায় সিগারেট ধোঁয়া

গোপন অঙ্গ ভাবছি সে বিরহে

কুলেখাঁড়ায় খাড়া না হলে

প্রেমিকার প্রেম নাটুকে প্রলাপ

আম বাগানে চলে, নবীনের খোঁজ

প্রেম প্রেম ঘন কাম  জীবন

অভিনয়  ভুলে মাতে আনন্দে

কাম, প্রেম চলে সমান্তরাল দেহে

প্রেমিক ছেলেরা বোঝে দেহের ভাষা

বেহালা বেজে ওঠে রমণীয় সুরে...



           


৬: নিষিদ্ধ কথা


 গুঁড়ো দুধ চুরি করে খাওয়ার বয়স 

তার টিউটর দিদিকে ভালোবেসেছিলো 

সুতির চাদর, মজার শীত আড়াল...

গন্ধমাদন পাহাড়ের গল্পে

চোখে পাহাড়, যদিও অদেখা

কল্পনায় সমুদ্র, অবচেতন ভাবুকতা 

হঠাৎ ছন্দপতন, বিষাদ নৃত্য...

নিষিদ্ধ তবু সত্য, বালকের প্রথম অনুভব

যৌনতা র কলম ধায়,  রূপের জ্যোৎস্নায়

সে কোন দৃঢ় দৃষ্টি আকর্ষণে

গাড়ি  গ্যালোপিং, সম্পর্কের বাধা পেরিয়ে

কোন কোণে, ত্রিকোণ আঁকে চকের আদরে

বয়স বাড়ে, মদ,মোহ,মাৎসর্য ডাকে

একঘেয়ে  পালতোলা  জীবন 

পানসি নৌকা ছিলো, স্রোত ছিলো 

ছিলো ভীষণ ঢেউ 

সাঁতার অজানা , তবু উন্মাদনার জলে হাবুডুবু।

ভালো থেকো,মরণজয়ী অমৃত প্রেম 

গুঁড়ো দুধ, চুরি করে খাওয়ার বয়স।    

ফিরে আসুক ঘন ঘন পুরনো বয়সের খেলা।   

      

         

৭:  অন্তর্জলি 


সাইকাসের তলায় আগুন দুটি ঠোঁট

তিলে তিলে বর্ষ শেষে নিভৃত আলো

          গোপন রেখেছে তার বেহালার তান..

সুন্দর ঋতু জুড়ে অঙ্ক হিসাব দিন মাস ক্ষণ 

মিলে যায় রসায়ন রস কড়া পাক

রসের রসিক জানে পথ নির্বাচন

মাটির প্রতিটি বিন্দু ঘেরা বিবর্তন

একাকী হিমেল হাওয়া নিজস্ব বাগান

           নিরপেক্ষতার স্বাদ আনে মৃত্যুর 



৮: নুন ভাত 


 বৌ টা বিরিয়ানির দোকানে ঢুকে চাঁদ দেখে

বাঁধা জীবনের বাইরে নদীস্নানের প্রথম মহরা 

উল্লসিত আকাশের তলে নিরূপায় সমর্পণ

তার প্রতিটি ছন্দে নিদারুণ বিশ্বাস ভাঙার ভয় 

 তবু ফলভারে ঝুঁকে যাওয়া আমগাছের সৌন্দর্য্য

নিতম্ব তার পাহাড়ের উচ্চতাকে হার মানায় 

সে এখন কারও বৌ নয় 

সে এক নারী শুধু নারী 

পরিবেশক হাতা নাড়ে বিরিয়ানীর হাঁড়িতে

বাড়িতে বৌ টি নুনভাত খায় সঙ্গে একটু ডাল 

তৃপ্তি, তাকে আরও বিশ্বাসী করে তোলে 

বিরিয়ানীর স্বাদ উদাস ছবি আঁকে

সফল  নুন ভাতের পাতে... 


   ৯:  প্রবাহ


একটা পাগল দেহ অনবরত হস্তমৈথুনে ব্যস্ত

পৃথিবী বেঁধে চলেছে চুলের ফিতে,রঙ বেরঙের

রাস্তায় ঘাসের শরীরে পথরেখা মিলিয়ে যাচ্ছে

একটা সবুজ বন্ধনে বাঁধা পরে শিশির মায়া

একদিন গ্রাম্য বনলতার রাণী শিখেছে শহুরে বিলাপ

ক্ষয়ে যাওয়া শ্যাওলা শরীরে রিরংসার ছাপ

আর কতদিন নিজেকে যোনির আড়ালে রাখা

জেগে থাকে বদ্ধ পুকুরের ঘুরপাকে নিয়তির খেলা

তবে কি থেমে যাবে সভ্যতার বেহাগ,ধুলোয় গড়াবে বাঁশীর ভুল

ইতিহাস হবে সবই থেকে যাবে অনন্ত গোধূলি

একদিন দেখো, ফোর জি তে জমবে ঝুল...




Comments

Popular posts from this blog

শম্পা সামন্তর কবিতা

মোনালিসা রেহমানের কবিতা

বিবেকানন্দ দাসের কবিতা