আবু তালেব মোল্লাহ্-র কবিতা
জীবন বৃত্তান্ত: আবু তালেব মোল্লাহ্-এর বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় জন্ম। বর্তমানে রাজশাহীতে বসবাস। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এম, এ। ছোটবেলা থেকে কবিতায় অনুরাগ। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ দুইটি।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির আটটি কবিতা ।
১: মেওয়া ফুল
এখনো মেওয়া ফুলে গেঁথে আছে,
সাপ্টিবাড়ির আকাশে যখন ঝলমল ভোরের সূর্য-
আনোয়ারা খালার বিছিয়ে দেওয়া সঁপের উপর
গামলা ভরে বাড়া ধোঁয়া ওঠা সাদাভাত লালশাক।
শরতের শিশির ঝলমল দূর্বাঘাসে
ঝ’রে প'ড়ে চেয়ে থাকা শিউলি বকুল,
বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাওয়া মাঠে সাঁতারু সোনাব্যাং
রাতের আঁধারে ক্ষুধার্ত শেয়ালের বিস্বাদ
২: কপাট
যতবার কড়া নেড়ে দুয়ারে রেখেছি পা
দরজা খুলে বন্ধ হয়েছে কপাট।
কী এমন হয়েছে তাতে?
মৃত্যু?
ভালবাসার মৃত্যু আছে নাকি!
অনুমতি ছাড়া সকল ভাষায়
ভালবাসা যায়
প্রেমের গান গাওয়া যায়,
সব গান প্রেমের।
৩: প্রমাদ
তারপর, অনেকদিন পরে
এক রাতে
আকাশ জুড়ে উঠবে চাঁদ;
তুমিও রবেনা
আমিও রবোনা-
নীলাকাশ গুনবে প্রমাদ,
কোন প্রাতে
আমাদের তরে।
৪: তার
রেখে দিয়েছি
বুকের তলায়
অসুবিধার
নিষিদ্ধতার
হাতের বিশেষ ছাপ।
যেদিন হারিয়ে যাবো
মিলিয়ে যাবে-
টুকে রাখা
সুনম্র থেকে কঠিন
পায়ের সকল ধাপ।
৫: ভালবেসে
এই সুবিধাটুকু দিতেই পারি
যদি ভাঁড়ার শুন্যও হয়।
যতোটুকু বের হয় রসকস
চেঁছে মুছে
পাত্র উল্টে ঢেলে দিতে পারি
তার নামে সবটুক।
তার কাছে এই সুবিধাটুক
চেয়ে নিতেই পারি
নিজের জন্য
ভিক্ষে,
কিংবা দাবীই করি যদি
ভালবাসি যখন
ক্ষতি কি
তার কাছে কিছু পেতে।
৬:জুড়ি
ইচ্ছে হলেই তো আর থেকে যাওয়া যায় না,
সময় হলে যেতে হয়।
যেতে সমস্যা কিসের?
আপত্তি রাখা উচিৎ নয়।
বরং এইবেলা ভেবে নেওয়া যায়,
প্রথম যখন ঠাঁই নেয় হৃদয়ে কেউ
চোখ দেখে বুঝে নিতে পারি, দেখা হলে
সেদিনের উৎসবে
আমিই তার জুড়ি হতাম
৭: চিঠি
শেষ চিঠি লেখার পরে
আরো একবার সে দেখা করতে আসে,
হয়না দেখা।
কবিতার ভেতর থেকে
আরো একটি কবিতা উঁকি মারে,
ততদিনে চোখ অন্ধ হয়েছে-
পায়না দেখতে।
সে আবার চিঠি লেখে,
তার চিঠি শেষ হয়না-এখনো লেখে
দুয়ারে রেখে যায়।
৮: তুমি
কোনো সন্ধ্যায়
চোখে
কামনা মদির আলো প'ড়ে
আমরা খুব কাছাকাছি চলে আসি,
তবু-
জেনে গেছি
তুমি আমার নও;
কিন্তু আমারই।
Comments
Post a Comment