শ্যামল সরকারের কবিতা
মাননীয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সচিবালয়ের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক । দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম ,পূর্বস্থলী থানার বেলগড়িয়া গ্রামে । বর্তমানে থাকেন হুগলির চুঁচুড়াতে। প্রাণী বিজ্ঞানে মাস্টার্স সহ ,পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা এগ্রিকালচার এক্সটেনশন ম্যানেজমেন্ট. সার্টিফাইড livestock Advisor. Manage হায়দরাবাদ থেকে । প্রাণী সম্পদ দপ্তরের বিভিন্ন দায়িত্ব সামলেছেন ।
সরকারি দায়িত্বশীল এবং উচ্চ পদে থেকেও কবিতার প্রতি তাঁর টান রয়ে গেছে সেই স্কুলে পড়াশোনার সময় থেকেই ।
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির ছয়টি কবিতা।
১: অলস বিকেল
ওরা শব্দের বনে ঘোরে ফেরে
খুঁটে খুঁটে একটা একটা করে শব্দ তুলে মনের সুতোয় মালা গাঁথে
তৈরি হয় লালিত্যে মাখানো বাক্য
বাক্যেরা ছটফট করে কাছাকাছি আসতে
তৈরি হয় কবিতা
কবিতার মাঝে জীবন ফিরে পায় ফেলে আসা অতীত, ব্যার্থ প্রেমের গভীর মর্মগাঁথা, বিরহের জ্বালা, একাকিত্বের মূর্ছনা
আবেগি আবেশের হাওয়ায় হারিয়ে যায় ভালোবাসার সোনালী দিন
কল্পনা আত্মহত্যা করে বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে
ভেঙে যাওয়া স্বপ্নরা জোড়া লাগতে না পেরে শরতের মেঘ হয়ে মিলিয়ে যায় নীল নীলিমায়
আমি বসে রই আরাম কেদারায়
যেমন থাকি তেমনই প্রতিদিন রবিবারের অলস বিকেলে ।
২ : খুশি
জীবনের সমান্তরালে ছুটেই চলেছি
লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে
কাছাকাছি আসতেই দূরে সরে যায়
স্পর্শ পেতে পেতেও না পাই স্পর্শ
সবাই সুখ চায় কেউ পায় কেউ পায় না
সুখের মাঝে দুঃখ মিশিয়ে জীবন এগিয়ে চলে
আশা আর নিরাশার নৌকায় চেপে
জীবন সার্থক হয় কিসে
সেটা বোঝে ক জন
চিত্তহীন বিত্ত নিয়ে কি হবে কে জানে
যদি চিত্ততে শান্তিই না থাকে
মসি ভাবে অসি বড় অসি ভাবে মসি
আমি বলি হে জীবন,
যা পেয়েছি তাতেই আমি খুশি ।
৩ : গ্রাম্য অতীত
যুগী পুকুর টা আছে
যুগী পুকুর পাড়ের সেই হেলা আমাগাছটা আর নেই তার সাথে নেই তালগাছ গুলো ও কলুমে সহ নানা আমগাছ
পুকুর পাড়ে কোন যোগীর বাস ছিল কি না সেই ইতিকথা কেউ শোনায়নি
জনসংখ্যা সামাল দিতে না পারায় পাড়া হয়েছে পুকুর পাড়
গ্রীষ্মের দুপুরে আমরা গাছের উপরে
ঝালঝুপটি খেলা সঙ্গে নুনলংকা গুঁড়ো সহ কাঁচা আমের খোলা
লাল চোখ ভিজে প্যান্ট
ভয়ে ভয়ে বাড়ি ফেরা
বাবার বকুনি মায়ের ঝাঁকুনি
নিত্যবৃত্ত অতীত না হয়
নংতৎপুরুষ সমাস
চিত্ত যেথা ভয় শূন্য নিম্ন সেথা শির
ভয় পরাভয় বুক ডিপ ডিপ
এই নিয়েই ছিল মোদের গ্রাম্য অতীত।
৪ : প্রেমের নগর পরিক্রমা
কত মণ আশীর্বাদের আগুনে অভিশাপ কে পোড়ালে
ভবিতব্য খাঁটি সোনা হয়
জানা থাকলে ই মেলে জানিয়ে দিও
বিরহ নামের প্রেমিকার কাছে
সময় হলেই ইনবক্সে গিয়ে দেখে নেবে অভিশাপগ্রস্ত প্রেমিকা প্রেমিকের বিয়োগ গাঁথা
প্রেম কালফণা তুলে ছোবল দিতে উদ্যত হলেই নষ্ট আগুন
পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে তাকে
পোড়া প্রেম বোষ্টম হয়ে
নগর পরিক্রমা করতে থাকবে প্রতি দিন ভোরে দোরে দোরে
৫ : সবই মায়া
বাগান ফুল ফল প্রজাপতি কোনটাকে প্রাধান্য দেব সেটাই ভেবে পাচ্ছি না
বাগান ক্ষেত্র- ফুল আধার -ফল লক্ষ্য -প্রজাপতি অনুঘটক
আমি তুমি সে তাহারা নিত্য নাটের যাত্রী
প্রবেশ আর প্রস্থানের মাঝে ঝলমলে রঙিন আলোর ঝলকানি
যেটা সাময়িক ঝলক মাত্র ।
৬ : ভাল আমি বেসেই যাব
আমার ভালোবাসার বিরুদ্ধে চাঁদ ধর্মঘট ডেকেছে
আমার অপরাধ আমি ভালোবাসার মহাজন
সমস্ত ভালোবাসা না কি আমার গুদামে মজুত করে রাখা আছে শ্রেণীসংগ্রামের থেকে শিক্ষা নিয়েই চাঁদ এই কূমতলব ফেদেছে আমাকে তারাদের কাছে ছোট করার জন্য
ভালোবাসা অপরাধ এই প্রথম শুনলাম
ভালোবাসাদের আমি খুব ভালোবাসি তাই যে আসে তাকে ছেড়ে না দিয়ে বুকে জমিয়ে রাখি
চাঁদের কলঙ্ক থাকতে পারে আমার ভালোবাসায় কোন কলঙ্ক নেই
নদীয়ানন্দন এর কাছাকাছি আমার বাস
তাই কলসির কানার পরিবর্তে আমি বুক ভরে ভালোবাসা বিলাই
নদ নদী বন জঙ্গল ফুল ফল আকাশ বাতাস কাকে ভালোবাসিনি
যতদিন বাঁচবো দূর থেকে বলে যাব
ওগো প্রিয় তোমাদের সকলকে আমি ভালোবেসে যাব
যেমন জল ছাড়া মাছ বাঁচে না তোমরা ছাড়া আমি বাঁচবো না ।
ব্রাভো!
ReplyDeleteপ্রত্যেকটি কবিতাই খুব ভালো লাগল।
ReplyDelete