বন্দনা বর্ধনের কবিতা
পরিচিতি : গৃহবধূ। কবিতাকে ভালোবেসে কবিতা লেখা। হুগলি জেলার চণ্ডীতলা থানায় নিবাস। কবিতা প্রকাশিত হয়েছে কিছু কিছু পত্রিকায় । বর্তমানে ফেসবুকে লিখে দারুণ পরিচিতি তৈরি করেছে এবং যুক্ত আছে জিরো বাউন্ডারি গ্রুপের সাথে। তার কবিতায় হৃদয় থেকে উঠে আসা শব্দ এবং অনুভূতির স্বতঃস্ফূর্ত অভিঘাত ও বিন্যাস খুঁজে পাওয়া যায় , ফলে পাঠকের মনে খুব দ্রুত পৌঁছে যায় কবিতার ঘ্রাণ
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে বন্দনার পাঁচটি কবিতা।
১: শূন্যতা থেকে জিরো
একটি ভোর ছিল জীবন্ত তরতাজা ভালোবাসা সোহাগে মোড়া
নিজে হাতে পুঁতেছি মাটির নিচে
যে জন উড়ে যায় দুর দিগন্তে
শূন্যতা থেকে জিরো মিশে আছে
একটা অবয়ব খোলা দরজা
টুকরো টুকরো মেঘ বুকের ভিতর বড়ো ভয় হয়
ঝুলন্ত সেতু গুমের কেঁদে ওঠে
এক পশলা বৃষ্টি বৃহত্তম সঙ্গম সাত সুরের সৃষ্টি
হাওয়ার ঝোঁকা মৌসম পালটে দেয়
ফুলের মধু আর ভোমরা এসে ফিরে যায়
বুকের বাঁ দিকে ডালি সাজিয়ে যে বাগান টি অপেক্ষায় এখন শূন্যতা থেকে জিরো
২ : মুছে যাক সব কালিমা
এইভাবে কেটে যাবে দিন গুলো
মরচে পড়া হৃদয়ে সাজানো হলো না বাগান
যা কিছু ছিল হিসেবে করা হয়নি কোনদিন
ভাঙ্গতে থাকা স্বপ্ন গুলো গোপনে বাঁচিয়ে রাখি
অদ্ভুত খেলার ছলে মাকড়শার জাল দিয়ে বেঁধেছি ঘর
আস্তে আস্তে ডুবে যাচ্ছি ঘুমন্ত শহরের বুকে
আসুক ফিরে স্বপ্নগুলো ,রাত্রি সহবাস
নতুন ভোরের আলো মুছে ফেলুক সব কালিমা
ওঠো জাগো নতুন সূর্য আলো নিয়ে
চলতে হবে অনেক টা পথ
আমি ভাঙব না অনেক কাজ বাকি
জীবনের ছোটো ছোটো খুশি মনের ঘরে এঁকে চলি
শরতের ভোরে শিউলির সুবাসে মুছে যাক হৃদয়ের গভীর ক্ষত সৃষ্টি হোক নতুন জন্ম
৩ : এসো প্রেম
প্রতিটি কোষে কোষে বাঁচিয়ে রাখি প্রেমকে
ঘৃণা ভয় হিংসা ভুলে আলিঙ্গন করি প্রেমকে
তোমার দু নয়নে যে আগুন জ্বলে ওঠে আবার জাগিয়ে তুলি নতুন করে
আমার হৃদপিণ্ড তোমার হৃদয়ে বছরের পর বছর জমা আছে
নিঃশ্বাস টুকু নিয়ে বেঁচে থাকা এসো প্রেম
এক সাথে পথ ধরে চলি দুর দিগন্তে
যেখানে কলবর নেই সবুজ ঘাসে একান্তে
রাঙিয়ে দিয়ে যাওয়া ভরা যৌবন
এইভাবে কাটিয়ে দেবো সারাটা জীবন
বন্ধ দরজা খুলে যাকে সব জানালা দিয়ে বয়ে আসুক শান্তির নিঃশ্বাস
বৃষ্টির কোণায় কোণায় মেলে ধরুক সোদা মাটির গন্ধ
আমরা হারিয়ে যায় প্রেম যমুনার তীরে
৪ : পড়ে থাকবে কিছু--
জীবনে চলার পথে কত ঠক্কর
ঘুম আর জাগরণে অলিগলি ঘোরা
কিছু কথা বেঁধে রাখা মায়া স্মৃতি
পদচিহ্নের মতো একদিন মুছে যাবে
দু পয়সার খদ্দের আনাগোনা
চোখ বুঝলেই অন্ধকার উঁকি দেয়
তোমার হারিয়ে যাওয়া নিঃশ্বাসের শেষ মুঠো
ভয়ঙ্কর ছিল শেষ যাত্রার
মোহের মাঝে কিছু দিন ঘোরাফেরা
কিছু কেরামতি দেখিয়ে লোপাট হওয়া
পড়ে থাকবে সব দেওয়ালে ছবি আর ধূপ দেওয়া
৫ : জীবন মানে জয় পরাজয়
এই ভাবে নদীর পথ ঢুকে যাবে আকাঙ্ক্ষিত অরণ্যে
উজ্জ্বল হাসি লেগে থাকুক মুখে
আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায় অভিমান আর রাগ
মৃত্যুর মাঝে কর্ম টুকু বেঁচে থাক
অলিগলি পদছাপ উঠানে তানপুরার সুর
রোদে ভেজা পাতা জানালা খুলে দেখি দুর বহু দুর
শব্দের অন্ধকারে জোয়ার ভাটার আসে বারে বারে
যোগ বিয়োগের মাঝে লুটিয়ে থাকা শুকনো পাতা শব্দের চাবিকাঠি বালিয়াড়ি দেওয়ালে টাঙ্গানো ফোটো সভ্যতার সৃষ্টি
কিসের এত সংশয় জীবন মানে জয় পরাজয়
আঁকা বাঁকা পথ বেড়িয়ে একটা সরলরেখা
হেঁটে চলতে থাকে কালের ঘুর্ণীঝড়
Comments
Post a Comment