চন্দন চৌধুরীর কবিতা


চন্দন চৌধুরী বাঁকুড়া জেলায় থাকেন । ষাটের দশকে জন্ম।  অবসরপ্রাপ্ত BSNL আধিকারিক।  কবিতার প্রতি তীব্র ভালোবাসাই কবিকে সদা যুবক রেখেছে , অনিয়মিত লেখেন স্থানীয় পত্র পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ, ' মুখোশ খুঁজেছে আজ মুখের ঠিকানা ' । জিরো বাউন্ডারি সব সময়ই নতুন প্রতিভার সন্ধান করে ।  চন্দন চৌধুরী জিরো বাউন্ডারি গ্রুপের যাথেও যুক্ত। 

আজ একক উদযাপন বিভাগে রইল কবির একগুচ্ছ কবিতা এক্কেবারে আলাদা স্বাদের। 

 ১ : ZERO IS TYPING 


তোর ঈর্ষা থেকে উঠে আসা 

একটি নগ্ন  পিঠ

এইমাত্র দুপুর-কে নিয়ে শুয়ে পড়েছে। 

আমাদের সীমান্ত অতিক্রম চোখে-

বারো হাত কাপড় 

যতই লুকিয়ে রাখুক -

এক্সট্রা দুটি বল--

বাউন্ডারি জানে---

কোন ব্যাটিং----নেট পর্দা ছিঁড়ছে 

আক্রোশ ছয়ের অনতিক্রম্য চোখ ধাঁধানো মার। 


এসবই একটি উত্তেজক টি ২০  শুধু নয়-

মাঠের বাইরে কিছু এলে বেলে দর্শক-

ঘুলঘুলি ফাঁক--

ঘুমিয়ে থাকা সাবান ফেনায়--

ধুয়ে দেবার বিনোদন-বেসিনআয়নার

অসদ্ বিম্ব কে প্রতি দিন শূন্য রানে আউট করছে। 


আমাদের দৈনন্দিন দৈর্ঘ্য থেকে

কেটে নেওয়া কয়েক ইঞ্চির আকাঙ্ক্ষা--

গ্রীন রুম ও জানে মে-কাপ এক ভয়াবহ

স্খলন---

প্রতি রাত এক দুর্যোগ মাপতে মাপতে

ভিজিয়ে দিয়েছে বাইশ গজ কেচ্ছা--

এ'সব এখন কানা উঁচু ক্যাচের লিকলিকে স্পর্শ--

সব অজানা সংকেত থেকে খুলে নিতে নিতে--

বুক-পথ নিসপিস কোনো ধ্বজভঙ্গ কলম--

চুপচাপ----

আমরা শয়ন স্বপন--

বি কেয়ার ফুল, জিরো ইজ টাইপিং। 


২ : ভ্রমণ 


এই পথে কাঁটা আছে ,জানো--তবু হাঁটো 

কেন প্রতিদিন। 


তোমার জন্য কেউ কেউ 

রেখেছে আরাম শয্যা নরমের ঢেউ, 

তবু কেন এই পথ- এই কষ্ট অভিসারে তুমি--

ভ্রমণের সব কষ্ট সব দুঃখ চুমি--

প্রতিদিন হাঁটো- প্রতিদিন শূণ্য হয়ে ফেরো। 


গাছের পাতার মতো ঝরে যাওয়া মোচন ব্যথার---

সব ঝরে গেল, 

তবু এক বিশ্বাসের বসন্ত হাওয়ার জন্য আশা--

জীবন কে নিষ্ঠ ভালোবাসা---

আবার কি পল্লবের শ্যামলিমা ঘোর লাগা রঙ্--

শোনে না বারণ---

তাই এই অভিসার--- এই কষ্ট সহ্যাতীত-

অনায়াসে গভীর করে মাখো। 


সবাই তো সবটা পারে না

তুমি পারো এভাবেই কাঁটা পথে

প্রতিদিন রক্ত মেখে নিতে। 


৩ : একলা 


খুব  একলা হতে ইচ্ছে করে। 

মনখারাপ এখন আর আসে

না কোনো নির্জনের দুপুর মেখে। 

এখন আর সাঁঝ করুন কোনো বিদায়-ছবি 

ভাসে না কোনো যাপনের অলস ভাবনা। 


এতো ভয়ংকর আরাম গুলি 

প্রতিদিন কেড়ে নেয় দুঃস্বপ্ন। 

এখন আর নীরবতার মতো শুনশান দেওয়াল --

ছবি আঁকে না কোনো নিরিবিলি নদী সন্ধ্যা। 

যে সমস্ত কথা এখনো গোপনে 

গুমরে মরে---

কোনও লেখনী-অক্ষর ফোটায় না ফোঁটা ফোঁটা স্মৃতি কোলাজ হারিয়ে যাওয়া গুলি। 


এখানে  আলো বড় তীব্র---

তাই অন্ধকার আজ 

ভাবনা থেকে ফলায় না কোনো মেহন-

ফুল। 


আমি একাকী হতে চাই। 

আমার নৌকোতে ভাসবে আমার একাকিত্ব, 

আর কেউ না। 


৪ : পরাজয় 


ঘুমের পক্ষে সবচেয়ে বড় পরাজয়-- তোকে আদর করা। 

অবিশ্রান্ত ঝরা বৃষ্টি তে 

তোর ছাতার আশ্রয়ে 

বড় হয়ে ওঠে আমার কনিষ্ঠ হারের

পালা। 


একটি নির্ভীকতা--- যখন নির্ভরশীল

কোনো বিমোহিত  ক্লিভেজ ল্যান্ডিং হয়--

জেনে রাখিস--

এমন একতরফা পরাজয়ের চেয়ে

আত্মহত্যা -

ঢের ভালো।


 পৃথিবীর যে কোনো -কৌতূহল নকশার 

নিষিদ্ধ নজর--

কেমোফ্লেজ ---

আমার ঋজু পথে  গড়িয়ে দিয়েছিস

দুই ভাওয়াল ভয়ংকর -

ডাকিনীবিদ্যার  -- আয়, আয় ডাক। 


ফের একবার যদি আসিস--

এবার সরিয়ে দেবো বালিশ---

ঘুমের পক্ষে আদর --

বড় বিপজ্জনক পরাজয়  --

হে মায়াবতী। 


৫ : অশ্লীল

         

একটি দুষ্টু হাতের মতো

ধেয়ে আসছে একটি অশ্লীল ফেনা। 

যাবতীয় রোমাঞ্চ জড়ো করতে করতে

কখন সূর্য উঠবে উষ্ণ অরণ্য---

প্রতি টি পুঞ্জ জল কণা 

জানে----

তৃষ্ণা এক যাযাবর জীবন। 


আরেকটু গভীর আনো নিজের শরীর। 

কাঁধ থেকে বেয়ে বেয়ে ঝরণা-আরাম

তলপেটের সব ক্রোধের অনশন----

তোমার শাওয়ার-নগ্ন একান্ত আপন--

গলে পড়ুক জানু ভেজানোর বিভাজিকা

কৌলীন্য। 


এসব-- সাবেক সোপের গন্ধ ই জানে-

প্রতি দিন একই সব দেখতে দেখতে 

অশ্লীল বলে আর কিছু ই থাকে না

অবশেষ। 


শুধু---

পোশাক পরলেই স্নানবতী তুমি--

অশ্লীল হয়ে ওঠো প্রতি দিন। 


৬ : 3.23GB 

                    

তোকে দেখতে লাগে মাত্র

থ্রি পয়েন্ট টু থ্রি জীবী---

এভাবেই চরিত্র কালো হয়। 

যতবার কাচতে বসি -

পরিস্কার ধবধবে করি, 

ততবারই---

পিছলে যায় সাবানের অশ্লীল দোষ। 


এইসব পিডিএফ ভেঙে

রাতের খাবার হয় বিবমিষ-

ক্লান্ত ডেটার   হা-হুতাশ। 


তবু রোজ 

-- নীল পর্দা নিষেধ সরিয়ে

তোর জন্য এ'কটি সামান্য থালায়--

থ্রি ইডিয়ট  প্লাস পয়েন্ট টু থ্রি---

জীবী(GB) খাবারের এক লোভকে

শানায়।



Comments

Popular posts from this blog

শম্পা সামন্তর কবিতা

মোনালিসা রেহমানের কবিতা

বিবেকানন্দ দাসের কবিতা