হামিদুল ইসলামের কবিতা
জন্ম 1955 সালের 5 মার্চ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত কুমারগঞ্জ থানার ভোঁওর গ্রামে। আর্থিক সংকটের কারণে শৈশবে মাতুলালয়ে গমন। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। পরের লাথ গুড়ি খেয়ে পড়াশোনা আরো একধাপ এগোয়। 14 বছর বয়েসে স্কুলের ম্যাগাজিনে প্রথম কবিতা প্রকাশ। এ যাবৎ ন'টি একক কাব্যগ্রন্থ। চল্লিশের উপর যৌথ সংকলন কাব্যগ্রন্থ। ' প্রাঙ্গণ সাহিত্য পত্রিকা ' থেকে " সাহিত্য রত্ন " ও " কবি সাগর " সম্মাননায় সম্মানিত। লেখা চলছে। " যবৎ বাঁচি তবৎ লিখি"এই ধারণায় বিশ্বাসী কবি
আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবির তিনটি ভিন্ন স্বাদের কবিতা।
১: মুক্তি
জলের উঠোনে ধূপের সুবাস
নির্জন বদ্বীপ জুড়ে ছায়াডোবা কোমল গান্ধার
ঘুঘু ডাকা পোয়াতি রোদ
শুয়ে থাকে আধপোড়া মায়ায় ।।
রেল লাইনের পাশ বেয়ে রাস্তা
যাত্রী বোঝাই হাজার হাজার রক্ত ভেজা লড়ি
কাড়া নাকাড়া
ঘরে ঘরে বিপ্লব ।।
তখনো হাতে হাতে বিলি হচ্ছে কারুকাজ করা প্রাচীন দিন
ছাতার নীচে চিরনিদ্রায় আচ্ছন্ন কালবেলা
ফেলে আসি শৈশব ।।
প্রতিদিন হাত ফসকে পেরিয়ে যাই
নিজের বসতবাটি
ইচ্ছেরা স্বাধীন ।।
বুভুক্ষু জনতা জানান দেয় আমাদের ঘাম নুন রক্তেই মুক্তির চাবিকাঠি
২: আমরা
কাশফুলে কবিতার জন্ম
ইলশেগুড়ি হয়ে পায়ে পায়ে জন্মান্তর আঁকি ।।
শূন্য ট্রেণস্টেশনে মৃত্যুশ্বাস
ছুঁয়ে দেখি আমার রক্তে জেগে আছে আমার পূর্বপুরুষ ।।
স্মৃতি হয়ে বেঁচে আছে আমাদের শাদা ভাতের ঘ্রাণ
ঘুমবাগানে বৃষ্টি
ভিজে যায় রাত ।।
আমরা তখনো যুবক যুবতী হয়ে লেপের ভেতর গড়ি কামনার আকাশ ।।
ইছেমোতি বয়ে চলে
ছই ডোবে জলে। আমরা দীর্ঘ জীবন খুঁজি
দিন বদলের কারাগারে
৩: রুপান্তর
নতুন জীবন গায়ে মাখি
উদ্বায়ু আলোয় ভরে ওঠে কৃষ্ণচূড়া
জলে হিরণ্ময় মাছ
কোমল শীৎকার ।।
কথায় কথায় বৃষ্টির কথকতা
বৃষ্টি নেই। তবু দুচোখে বৃষ্টির আঁচ মাখে যুবতী সন্ধ্যা
আঙিনায় পেলবতা
কুয়াশায় ঝুলে থাকে মায়াময় জোনাক ।।
ঈশ্বরীতলায় ঘোর অন্ধকার
অন্ধকারে শুয়ে আছে ঈশ্বর। আমরাও মাঝে মাঝে ঈশ্বর হয়ে যাই ।।
Comments
Post a Comment