Posts

Showing posts from November, 2020

দেবানন্দ ভট্টাচার্যের কবিতা

Image
  দেবানন্দ ভট্টাচার্য। জন্ম কলকাতায়। উনিশশো তিপ্পান্ন সালে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি একজন আঁকিয়ে।'নির্বাচিত কবিতা' সহ মুদ্রিত বই তিনটি। আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে কবি দেবানন্দ ভট্টাচার্যের একগুচ্ছ কবিতা।  ১: নদীকান্না কাল সারারাত একটা কুকুর বুকভাঙা আর্তনাদে অন্ধকারে ডুবে ছিল। বিমর্ষ চাঁদের ঘোলাটে জোছনার জল ছড়ানো চারদিকে। আমার প্রথম দ্যাখা  বরুণা-নদীটি হয়তো এখন ভিন্ন গ্রহবাসী। কুকুরের হাহাকারে অস্পষ্ট সে-ও এসেছিল জলমগ্ন অবয়বে। কুয়াশাধূসর এই ছবি গা-ভাসালো নদীকান্না হয়ে।             ২: একক শালুক খানিক অবকাশে কখনোসখনো ব্যতিক্রমী সন্ধ্যাও জুটে যায়। ভিন্ন অর্থবহ পরিবেশ কতো কি ভাবায় সবটা তো বলে দেওয়া যায় না। সম্পর্কের গভীরে কৃষ্ণবর্ণ জল তেচোখা মাছ শ্যাওলা শামুক জলে গোল্লাকাটা আলপনা বিপ্রতীপে একক শালুক....... ফুটে আছে।সেই ঘন কৃষ্ণবর্ণ জলে ডুবে যাই।শহরতলীর অলিগলিতে বিবর্ণ জোছনা নয়ানজলির ছবি হয়ে পড়ে আছে। খানিক অবকাশে সে এক দুর্লভ প্রাপ্তি!                                      ৩: অবন-পাখা ফুলের কোণে ছোট্ট এক প্রজাপতি।  রঙিন পাখা। কে এঁকেছেন

আমিনা তাবাসসুমের কবিতা

Image
এই সময়ে খুব দ্রুত উঠে আসা এক নাম আমিনা তাবাসসুম।  মুর্শিদাবাদ জেলায় নিবাস। পূর্বে সনেট প্রকাশনার সাথে যুক্ত ছিলেন  ,  লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।  বর্তমানে জিরো বাউন্ডারি গ্রুপের সাথে যুক্ত  আছেন। তরুণ এই কবি কবিতার নানান ঘরানায় লিখতে অভ্যস্ত, ছন্দের পাশাপাশি  গদ্যরীতিতেও। রোমান্টিক এই কবি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছেন নিজস্ব ভাষা শৈলীর নিরিখে।  আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে আমিনা তাবাসসুমের চারটি রোমান্টিক প্রেমের কবিতা।  ১ : দু মুঠো চুমুর দিব্যি  এই চোখের তারায় মৃত্যু বয়ে বেড়াচ্ছি হাজার বছর থেকে, প্রেমিকের বুকের বালিয়াড়ি আর বরফের হিমবাহ চূর্ণ বিচূর্ণ হয়েছে অনায়াসে তবু আটকে রাখিনি চিতার আগুন, জ্বালিয়েছি গভীর রাত্রে সহবাসের সময় সঙ্গিনীর শরীর আর মৃত্যুতে প্রেমের বীজ রোপন করেছি কাঠামো জুড়ে। বিশ্বাসের অনাহারে সম্পর্কের গভীর ক্ষত বিলাসে ক্যাকটাস গজিয়ে ওঠে সেখানে জল দিয়ে বড়ো করি কাঁটার অবিন্যস্ত ষড়যন্ত্র। না না, ভয় নেই তোমার গজিয়ে ওঠা ফণা কিভাবে মাড়িয়ে যেতে হয় ঠোঁটের আদরে সে আমি জানি। বাসস্টপের স্রোতে গা ভাসিয়ে রোদ কুড়ানোর সময় আমার নেই। তাই আক

মানসী বিশ্বাসের কবিতা

Image
  পরিচিতি :  কার্গিল যুদ্ধের কিছু পরেই জন্ম, বড় হয়ে ওঠা প্রকৃতিকে দেখতে দেখতে । বর্তমানে গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ করে যাদবপুরে মাস্টার্সের ছাত্রী। পিওর সায়েন্সের স্টুডেন্ট হয়েও বাংলা'র প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা রয়েছে, যা আজীবন থাকবে। লেখালেখি শুরু চার বছর আগে, লিটিল ম্যাগাজিন ও কিছু দৈনিক পত্রিকায়। আপাতত কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ নিয়েই জগৎ। রীডার, স্পিকার, পজিটিভ মাইন্ডেড।বর্তমানে ' মুক্তচিন্তন  '  ম্যাগাজিনের সম্পাদনার দায়িত্বে।  আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে মানসী বিশ্বাসের ছয়টি  কবিতা।   ১: অকুঞ্চক মুক্তির আঁচলে রক্তস্রোত, ঘিনঘিনে অকথ্যকথন মিথ্যে স্তূপের আখড়া হয়ে ই ইকুয়ালস টু এম সি স্কোয়ারের সূত্র বানায় বালিশভেজা কান্না নিয়ে ঘুম আসে একটা ঈগল, একটা শকুন, একটা বাঘ নখে নখে চিবিয়ে খায় ইজ্জত পারদের অকারান্তে রাত্রি নামে জানালায় পা ছোঁয়া দিঘি'র জল  বাস্প হয়ে উলু দেয় আমাদের গরম ভাতে কাঁচা ঘুম আর একফালি চাঁদ                                  --- বিভেদ ঘোঁচায়। ২ : গাঁ আমাদের বুকে জমা কাজলা দিদি পুকুর পাড়ে'র উচ্ছে চারা, নেতিয়ে পড়া কল্মি-শাকে ঘুম জাগে রাত নামলে দিঘ

ছাব্বির আহমেদের কবিতা

Image
  ছাব্বির আহমেদ(১৯৯৪): নদীয়া জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কাঁঠালিয়ার বাসিন্দা । স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির ইচ্ছে , পরে  মুর্শিদাবাদের তরুণ কবি আমিনা তাবাসসুমের সান্নিধ্যে  ধীরে ধীরে সাহিত্য জগতে প্রবেশ , লেখার পাশাপাশি পুরোনো দিনের গান শুনতে ভালোবাসে। প্রথম কবিতা 'সন্মান' প্রকাশ পায় মুক্তি সাহিত্য পত্রিকায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে কবিতা প্রকাশ পায় এবং এখনো বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে তরুণ এই কবির পাঁচটি কবিতা।   ১: আরাকান রাজসভার মিটিংয়ে আজ আকাশের গায়ে চাদরে ঢাকা থাকায় তুমি বলছো সাইটিকা বাত, মক্কা-মদিনার খেলাও হতে পারে তাহলে অবনী ঘোষের বিদ্যুৎবামের দাম একটু কম হলো না কেনো? শিয়াল-কুমিরের গল্পটা আমার জানা ছিলনা  এখন নতুন করে আবার পড়তে হবে তাই চায়ের কাপে চিনি একটু কম দিয়েছি। এখন তুমি ফুটবল খেলবে নাকি ডেল কর্নেগির 'আমনিবাস' পড়বে, সেটা জানিয়ে দিলেই আমি আরাকান রাজসভায় মিটিং বসাবো। আরব্য রজনী কাহিনীর রহস্য উদঘাটন আমার দ্বারা হয়নি বলেই আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা ১২০০ মিটার আর আমি সেই টাওয়ারের নীচে বসেই নজরুলের

শ্রাবণ কয়ালের কবিতা

Image
পরিচিতি: সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা।পেশাগত জীবনে একজন গৃহ শিক্ষক, সেই সঙ্গে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি, জন্ম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত লক্ষিকান্তপুর সংলগ্ন এলাকায়। আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে তরুণ এই কবির চারটি কবিতা।  ১: বউকে জানাতে নেই                   ফ্লিপকার্টে দু প্যাকেট বিড়ি অর্ডার দিলাম  কাল বন্ধু ফেরিডোন কিনেছে এখন ঘুমাচ্ছে ফ্লিপকার্ট বিড়িতে দারুন নেশা  বাপের জন্মে নাগরদোলা চড়িনি আজ চড়লাম এর আগে দুটো বুট কিনেছিলাম খালি পায়ে চাষ করতে বড্ড অসুবিধে  সংসারের যাবতীয় জিনিস এখন ফ্লিপকার্টেই মেলে গিন্নির ব্লাউস ও ভাবছি চুল্লুর অর্ডারটাও দেবো ঠেকে পুলিশের যা বাড়বাড়ন্ত চুল্লুর দোকানে বিড়ি ধরিয়ে হাজত বাস ফ্লিপকার্টে বিড়ি অর্ডারের বুদ্ধিটা গিন্নিই দিয়েছিল ফ্লিপকার্টে চুল্লু কেনার বুদ্ধিটা নিজের আসলে সব কথা বউকে জানাতে নেই।           ২: যুদ্ধ                  ঘুমে সাঁতার কাটতে কাটতে আর্মেনিয়া উঠলাম খবর পেলাম আপেল নিয়ে আর্বানজেন্টিনার সঙ্গে যুদ্ধ  আপেলটি সীমারেখায় ঝুলছে লাউ কিংবা ঝিঙে হলে সম্ভব না আপেলের প্রতি বেশি আকৃষ্ট____ ফিরতি পথে একজন দৈত্য  পা দু'টো হিড় হিড় করে

মহম্মদ আফজলের কবিতা

Image
  মহম্মদ আফজল,জন্ম ১৯৯৪ সালের ২৮ শে মার্চ,পুরুলিয়া-ঝাড়খন্ড সীমান্তবর্তী এক প্রত্যন্ত গ্রামে থাকেন,যেখানে বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হল নৌকা। কৈশোরে পিতৃবিয়োগ হয় তরুণ এই কবির। তাই সংসারের বোঝা মাথায় নিতে অল্প বয়সেই পৈতৃক কাপড়ের দোকানে বসেন। কিন্তু কবিত্ব তাঁর রক্তে,তিনি স্বভাবকবি,তাই দোকানে খরিদ্দার সামলানোর পাশাপাশি ফাঁক পেলেই কবিতার খাতা নিয়ে বসে পড়েন।৷ এলাকায় সাঁওতাল ও নিম্ন বর্গের হিন্দু জনজাতির বাস,তাঁরা উচ্চমাধ্যমিকের পর যোগাযোগ না থাকার জন্য কলেজে যেতে পারে না,বিশেষ করে মেয়েরা,নারী শিক্ষা সচেতন এই কবি এলাকার নদীতে সেতুর জন্যও আন্দোলন করেন। পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম যেখানে সাহিত্য চর্চা প্রায় নেই বললেই চলে সেখানে তিনি নিজের আলোতেই ভাস্বর হয়ে জ্বলছেন একা একা। বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় তাঁর লেখা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আজ জিরো বাউন্ডারির একক উদযাপন বিভাগে থাকছে তরুণ কবি মহম্মদ আফজলের একগুচ্ছ কবিতা।  ১: কবিতার সিক্যুয়েল চাঁদের আলোটা আজও আগলে রেখেছে ফাঁকা চেয়ারে মাখা গন্ধটা একদিন পুড়েছিল, পাহাড়ের এপারে নদী পেরিয়ে আসা কবিতার খেলাঘর ছোট্ট রাস্তার ধুলোয় পায়ের ছাপগুলো একদিন

অনিরুদ্ধ আলমের কবিতা

Image
সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত অনিরুদ্ধ আলম (Anirudha Alam) পেশাগত জীবনে একজন ফ্রিল্যান্স উন্নয়নকর্মসূচি কন্সালটেন্ট এবং উন্নয়ন-যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি এ পর্যন্ত চল্লিশটিরও অধিক বই লিখেছেন এবং সম্পাদনা করেছেন। তাঁর প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: সোনালি নৈঃশব্দ্যের হরিণাবলি (কবিতা), প্রেম কি কেবলি পাখিপ্রবণ (কবিতা), ভালবাসা প্রিয়তমাসু (কবিতা), অনেকটা পথ হাঁটতে হবে ঘুমিয়ে পড়ার আগে (কিশোর কবিত), ২৪ অক্টোবর ১৯৭১ (উপন্যাসিকা), এইসব রাতদিন (কিশোর কবিতা), দূরের ডাক (ছড়াকবিতা), তারপর তারপর (ছড়া), সকলের জন্যে পরিবেশ পরিবেশের জন্যে সকলে (ছড়ানাটিকা), পিঁপড়ে (সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস), অপারেশন ক্যালপি বত্রিশ (সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস), এবং ক্রিনোর অপেক্ষায় (সায়েন্স ফিকশন), তেইশ শত দুই সালের এক জানুয়ারি (ছোটো গল্প), দু’ শ’ বছরের সেরা বাংলা কিশোর গল্প (সম্পাদিত গল্পের সংকলন), তোমাদের জন্যে বাংলা বানান (বাংলা বানান বিষযক প্রবন্ধ), আমাদের কালো মানিক: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (জীবনী)।   শিক্ষাগত জীবনে তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্য এবং কমপিউটার-প্রযুক্তি বিষয়ে দেশেবিদেশে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে সপরিব